ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন লাঞ্চ বিরতিতে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৬৯।
টেস্ট একাদশে ফেরা সাদমান ইসলাম অপরাজিত ৩৩ রানে। অধিনায়ক মুমিনুল হক ২ দফায় অল্পের জন্য বেঁচে গিয়ে টিকে আছেন ২ রান নিয়ে।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নামে টস জিতে। লাঞ্চের আগে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো মনে হয়েছে যথেষ্টই। বল ব্যাটে-এসেছে, বাউন্স ছিল সমান।
বাংলাদেশের শুরুটায়ও ছিল ভালো কিছুর ইঙ্গিত। প্রথম বলেই কেমার রোচের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে সাদমানের বাউন্ডারিতে শুরু হয় ম্যাচ। প্রথম চার ওভারেই দুই ওপেনারের ব্যাট থেকে আসে দুটি করে বাউন্ডারি।
পঞ্চম ওভারেই তামিমকে হারানোর ধাক্কা। রাউন্ড দা উইকেটে করা রোচের ডেলিভারি স্কিড করে অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকে একটু। তামিম পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করেন বটে, তবে ব্যাট-প্যাডে ফাঁক রেখে দেন অনেকটা। ব্যাটে হালকা ছুঁয়ে বল উড়িয়ে দেয় বেলস।

বাংলাদেশের আরেকটি উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদের উল্লাস।
৯ রান করে মুশফিকুর রহিমকে ছাড়িয়ে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড আবার নিজের করে নেন তামিম (৪ হাজার ৪১৪)। তবে ওই ৯ রানেই শেষ তার ইনিংস।
সাদমান ও শান্ত এরপর এগোতে থাকেন মৃসণ গতিতেই। রোচের বলে দারুণ এক ড্রাইভে চার মেরে শান্তর পথচলা শুরু হয়। পরে গ্যাব্রিয়েলের বলে স্ট্রেট ড্রাইভে চার মারেন আরেকটি, প্রথম সেশনের সেরা শট বলা যায় যেটিকে।
ছন্দ পেতে ভুগতে থাকা শ্যানন গ্যাব্রিয়েল শুরুতে ছিলেন একটু এলোমেলো। পরে একটু গুছিয়ে নিয়ে বেশ গতিময় বোলিং করেন। শরীর তাক করা কিছু বল সাদমানকে ভোগান্তিতেও ফেলে বেশ।
ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট প্রথম ঘণ্টায়ই আক্রমণে আনেন রাকিম কর্নওয়ালকে। উইকেট থেকে কিছুটা বাউন্স আদায় করে নেন ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার অফ স্পিনার। কয়েকটি বল টার্নও করে তীক্ষ্ণভাবে। তবে উইকেট পাননি এখনও।
শান্তকে মনে হচ্ছিল খুবই আত্মবিশ্বাসী। সাদমানের সঙ্গে তার জুটিও জমে গিয়েছিল। তখনই দুজনের ভুল বোঝাবুঝি। কাইল মেয়ার্সের বল লং লেগের দিকে খেলেন সাদমান, প্রথম রান এসে যায় অনায়াসেই। দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় শান্ত ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকলেও ছুটতে থাকেন সাদমান, শান্তকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেও তার থামাথামি নেই। শেষ পর্যন্ত শান্তও দৌড় শুরু করেন, কিন্তু ক্রিজের কাছাকাছিও পারেননি যেতে। ২৫ রানেই সমাপ্তি তার সম্ভাবনাময় ইনিংসের।
বাংলাদেশের বিপদ বাড়তে পারত আরও। গ্যাব্রিয়েলের শর্ট বল মুমিনুলের ব্যাট ছুঁয়ে সরাসরি শর্ট লেগ ফিল্ডারের হাতে যায়নি একটুর জন্য। এক বল পর আরেকটি শর্ট বল ঠিকমতো খেলতে না পেরে আবার রক্ষা পান মুমিনুল। বাংলাদেশের জন্য স্বস্তি, অপরাজিত থেকেই লাঞ্চে যেতে পেরেছেন অধিনায়ক।
বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে এক পেসার ও চার স্পিনার নিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণে দুই ফাস্ট বোলারের সঙ্গে আছেন দুই স্পিনার, সঙ্গে আছেন অভিষিক্ত পেস বোলিং অলরাউন্ডার কাইল মেয়ার্স। মেয়ার্সের সঙ্গে এ দিন টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন শেন মোজলি ও এনক্রুমা বনার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৯ ওভারে ৬৯/২ (সাদমান ৩৩*, তামিম ৯, শান্ত ২৫, মুমিনুল ২*; রোচ ৬-২-১৫-১, গ্যাব্রিয়েল ৭-৩-২০-০, কর্নওয়াল ১০-১-২৫-০, মেয়ার্স ৫-১-৭-০, ওয়ারিক্যান ১-০-২-০)