সিআইডি
কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। মিঠুর সঙ্গে যে
তরুণীর সম্পর্ক ছিল, তার ভগ্নিপতিই এই হত্যাকাণ্ডের ‘হোতা’।
২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর মিঠু নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর
তার বাবা এনামুল শিকদার বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায়
হত্যা মামলা করেন।
মিঠুর লাশ পাওয়া যায়নি। তাকে হত্যার পর বিষখালী নদীতে ফেলে
দেওয়া হয়েছিল বলে সিআইডি জানতে পেরেছে।
মিঠু হত্যার তদন্তে নেমে গত ৩ জানুয়ারি খুলনার বাগমারা
এলাকা থেকে রাশেদুল ইসলাম (৩২) এবং ৫ জানুয়ারি খুলনার বাধাল এলাকা থেকে সুমন
মল্লিক (৩৫) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর ২৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয় মেহেদি চৌধুরী ইমরানকে
(৩৪), ঝালকাঠি সরকারি কলেজের সামনে থেকে।
সোমবার
ইমরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে রাশেদুল ও সুমনও জবানবন্দি
দেন।
তাদের
জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত জানা যায় বলে খুলনা জেলা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার মেহেদি চৌধুরী ইমরান
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের
বর্ণনা অনুযায়ী রিয়াজুল
ইসলাম আহাদ (৩৫) এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি। তবে তিনি এখনও পলাতক।
আহাদের
শ্যালিকার সঙ্গেই মিঠুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে পুলিশ জানায়।
সিআইডি কর্মকর্তা আনিস বলেন, “আহাদ এই প্রেমের
সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। সে মিঠুকে তার শ্যালিকার সাথে মেলামেশা করতে নিষেধ
করেছিল। কিন্তু মিঠু তার কথা শোনেনি। এ কারণে সে মিঠুকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার
পরিকল্পনা করে।”
আহাদ
একজন পেশাদার অপরাধী ও খুন, অস্ত্রসহ একাধিক মামলার আসামি বলে পুলশ জানায়।
আনিস বলেন, “পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আহাদ এবং রাশেদুল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে মিঠুর সঙ্গে।
ঘটনার দিন ২০১৬ সালের ১৫ নভেম্বর রাশেদুলের মোবাইল নম্বর দিয়ে
আহাদ মিঠুকে ফোন করে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে। মিঠুর বাড়িতে এসে তাকে নিয়ে মোটর সাইকেলে
তিনজন ঝালকাঠি যায়। সেখানে অবস্থান করছিল সুমন মল্লিক ও চৌধুরী ইমরান।
“এরপর ইমরানের খালু মৃত বারেক ডিলারের ঝালকাঠির কেপায়েত নগর
গ্রামের পরিত্যক্ত
বাসায় আসামিরা কোমল পানীয়ে ঘুমের ওষুধ
মিশিয়ে অজ্ঞান করে মিঠুকে গলায় রশি বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা
করে। পরে মিঠুর লাশ একটি বস্তায় ভরে মোটর সাইকেলে করে গাবখান ব্রিজের উপর থেকে
নদীর মাঝে ফেলে দেয়।”
এ কারণে মিঠুর মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে জানান
সিআইডি কর্মকর্তা আনিস।