ক্যাটাগরি

মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের প্রভাব বাংলাদেশের ১ লাখ টন চালে

এই চাল আমদানি করতে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি হয়েছিল।

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের দুদিন পর বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চাল আমদানির প্রস্তাবটি অনুমোদনও হয়।

চুক্তি হলেও মিয়ানমারে সরকার পরিবর্তন হওয়ার কারণে এখন বিষয়টি নিয়ে ‘ধীরে এগোনোর’ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

প্রতিবেশী দেশটিতে সোমবার গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী; গোটা দেশে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থাও জারি করা হয়েছে।

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরোধিতায় যখন বিশ্বজুড়ে নিন্দা চলছে, তখন দেশটি থেকে সরকারিভাবে চাল আমদানি কতটা সঙ্গত- বৈঠকের পর এই প্রশ্ন সাংবাদিকরা করেন মুস্তফা কামালকে, যিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই সভায় সভাপতিত্ব করেন।

জবাবে তিনি বলেন, “এটা অনুমোদিত হয়নি। এই পরিবর্তন আসার আগেই আমরা একটি চুক্তি করেছিলাম মিয়ানমারের সাথে। নরমাল সারকমসটেন্সে মিয়ানমারের সঙ্গে সেই রকম ব্যবসায়িক সম্পর্ক আমাদের নেই। বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে যখন আমাদের কোনো উপায় থাকে না, তখন ওদের কাছে যাওয়া লাগে। যেমন পেঁয়াজ আনতে হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “এখন এবারও এই প্রজেক্টটি আছে। আমরা বলেছি, ধীরে এগোনোর জন্য। কারণ যাদের সঙ্গে চুক্তি করেছিলাম, তারা এখন নেই।

“আর আমরা এটা কিনলেও আন্তর্জাতিক শর্ত মেনে লেটার অব ক্রেডিটের মাধ্যমে কিনব। সেখানে শর্ত থাকে কারণ এখানে কোনো এডভান্স পেইমেন্টের কোনো ব্যবস্থা থাকে না। লেটার অব ক্রেডিটের মাধ্যমে যেই এগ্রিমেন্ট আমরা করেছিলাম। পণ্যগুলো পূর্ণ মাত্রায় শিপমেন্ট না হলে এবং লেটার অব ক্রেডিটের মাধ্যমে শিপিং ডকুমেন্টস সাবমিট না করা হলে আমরা পেইমেন্ট করি না। সুতরাং আমাদের কোনো লস হওয়ার সম্ভাবনা নেই।”

এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে মিয়ানমার থেকে চাল আমদানির প্রস্তাবটিও রয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক মিয়ানমার থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এক লাখ টন আতপ চাল ৪১১ কোটি ২৮ লাখ টাকায় কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তবে পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী
তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মিয়ানমার থেকে সরকারি পর্যায়ে
১ লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির প্রস্তাব ‘শর্ত সাপেক্ষে  ’অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

মজুদ কমে যাওয়ায় সম্প্রতি সরকার চাল আমদানি উন্মুক্ত করে আমদানি শুল্কও কমিয়ে দিয়েছে। এরপর মঙ্গলবার পর্যন্ত বেসরকারিভাবে মোট ৫৬ হাজার ৩৯১ টন চাল দেশে পৌঁছেছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এছাড়া সরকারিভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির আওতায় ৫৫ হাজার ১২৯ মেট্রিক টন চাল দেশে পৌঁছেছে। দুই মিলিয়ে মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৫২০ মেট্রিক টন চাল দেশে পৌঁছেছে।

ক্রয় মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তিনটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি প্রস্তাব উত্থাপন হয়েছিল।

এদিন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য ৪টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ‘মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদীতীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং’ প্রকল্পের প্রস্তাবটি ‘টেকনিক্যাল’ কারণে অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে জানান অর্থমন্ত্রী।