ক্যাটাগরি

স্বাক্ষর জালিয়াতি: জামিন না দিয়ে আসামিকে পুলিশে দিল হাই কোর্ট

তার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বুধবার বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালত থেকেই করিম মিয়াকে শাহবাগ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাকে চালান করে দেয় বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমজাদ হোসেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সিল-স্বাক্ষর জাল করেছেন আসামি করিম মিয়া। পরে তিনজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা হয়।

তিনি বলেন, এই মামলায় দুই আসামি গ্রেপ্তার হলেও করিম মিয়া পলাতক ছিলেন। এর মধ্যে তিনি হাই কোর্টের আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আজ তার আবেদনটির শুনানির পর জামিন না দিয়ে শাহবাগ থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

আদালত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেছে কিনা জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আদালত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালের যে প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা ক্ষমার অযোগ্য। এদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি।”

গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টায় রংপুর-বগুড়া মহাসড়কে বড় ঈদগাহ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে রাত্রীকালীন পাহাড়ার সময় বরাগ বাঁশ বোঝাই লালমনিহাট থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রাক থামায় হাইওয়ে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাকের ড্রিইভার মো. আজিম উদ্দিন ও তার সহযোগী (হেলপার) মো. মোতালেব হোসেন জানায় এই বাঁশ প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবনে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তখন তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সিল-স্বাক্ষর দেওয়া একটি চিঠি দেখায়।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর‌্যায়ে ড্রাইভার আজিম উদ্দিন জানান এ চিঠিটি ট্রাকের মালিক মো. করিম মিয়া তাকে দিয়েছে। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে বাঁশভর্তি ট্রাক ও চিঠিটি জব্দ করে দয়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া অঞ্চলের সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপারকে জানান।

পুলিশ সুপার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, তিনি লেফট্যানেন্ট কর্নেল নন, তিনি কর্নেল। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। তখন আসামিরা স্বাক্ষর জালের কথা স্বীকার করেন। 

পরে ট্রাকের মালিক করিম মিয়াসহ তাদের বিরুদ্ধে ১৭৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ৩৪ বিরুদ্ধে মামলা করেন রংপুরের পীরগঞ্জের বড়দরগাহ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন। 

ট্রাকের মালিক আসামি করিমের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর বালাপাড়া গ্রামে। ট্রাকের ড্রাইভার মো. আজিম উদ্দিনের বাড়ি একই উপজেলার উত্তর বত্রিশ হাজারী গ্রামে। আর ড্রাইভারের সহযোগী (হেলপার) মো. আজিম উদ্দিনের বাড়ি উপজেলার হরেরাম গ্রামে।