বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।
গত ৬ জানুয়ারি বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ২২৫ কোটি টাকা তোলার অনুমতি দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসি।
এখন তাদের শেয়ারের প্রান্তসীমা মূল্য (কাটঅফ প্রাইস) নির্ধারণের জন্য আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টা থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টা পর্যন্ত নিলাম হবে।
নিলাম শুরুর আগে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের কারখানা দেখাতে একদল সাংবাদিককে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর কাদির শাফি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২২৫ কোটি টাকা তুলবে।
এর মধ্যে ১৪৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের দুই সহযোগী কোম্পানি কর্ণফুলী পাওয়ার লিমিটেড এবং বারাকা শিকলাবাহা পাওয়ার লিমিটেডে বিনিয়োগ করা হবে।
বাকি টাকা থেকে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ করা হবে এবং আইপিও খরচ বহন করা হবে বলে জানান মঞ্জুর কাদির শাফি।
বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের পাশাপাশি তাদের সহযোগী কোম্পানি কর্ণফুলী পাওয়ার লিমিটেড এবং বারাকা শিকলাবাহা পাওয়ার লিমিটেড ঘুরিয়ে দেখানো হয় সাংবাদিকদের।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ২০১১ তালিকাভুক্ত বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হচ্ছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড।
পতেঙ্গায় তাদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফার্নেস অয়েল বা এইচএফও ব্যবহার করে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উত্পাদন করা যায়।
২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার তিন বছর পর কাজ শুরু করে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড।
২০২০ সালের ৩০ জুনের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী এ কোম্পানির মোট সম্পদের পরিমাণ ২ হাজার ৬৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে সম্মিলিতভাবে মুনাফা করেছে ৬৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের দ্বিগুণের বেশি।
কর্ণফুলী পাওয়ার লিমিটেড এবং বারাকা শিকলাবাহা পাওয়ার লিমিটেডের ৫১ শতাংশের মালিক বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।
মঞ্জুর কাদির শাফি বলেন, কর্ণফুলী পাওয়ার ১১০ মেগা-ওয়াট ক্ষমতার এবং বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার ১০৫ মেগা-ওয়াট ক্ষমতার ফার্নেস অয়েল বা এইচএফও ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।
এ দুটি সহযোগী কোম্পানি স্থাপনে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানান তিনি।
মঞ্জুর কাদির শাফি বলেন, “সাবসিডিয়ারি দুটি যোগ হওয়ার পরে গত বছর বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের মুনাফ দ্বিগুণ হয়ে গেছে।”
তবে সঞ্চালন লাইনের অপর্যাপ্ততার কারণে সাবসিডিয়ারি বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটির সম্পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারছে না জানিয়ে মঞ্জুর কাদির শাফি বলেন, “আগামী মে থেকে আমরা সম্পূর্ণ উৎপাদনে যেতে সক্ষম হব এবং আমাদের কোম্পানির আয়ও বৃদ্ধি পাবে।”
দুটি সাবসিডিয়ারি বন্ধ থাকার পরও বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের মুনাফা কীভাবে বাড়ল জানতে চাইলে মঞ্জুর কাদির বলেন, “আমরা প্রতি মাসে সরাকার থেকে চুক্তি অনুযায়ী ২২ কোটি টাকা পাই। যার মধ্যে ১১ কোটি আসে কর্ণফুলী পাওয়ার থেকে, বাকিটা শিকলবাহা পাওয়ার থেকে।
“এই টাকা উত্পাদন না হলেও পাওয় যায়। এই ২২ কোটি টাকা থেকে প্রতি মাসে ৪ থেকে ৬ কোটি টাকা মুনাফা হয়, যার ৫১ শাতংশ পেয়ে যায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।”
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ২০০৭ সালে ৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের মূল মালিক কোম্পানি বারাকা পাওয়ারের।
বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের আইপিওর ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে লংকা বাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।