বৃহস্পতিবার ঢাকার জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এক
অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন হবে।
ঢাকায় প্রায় ৩০০টি স্থান থেকে টিকা দেওয়া হবে।
“স্বাস্থ্য বিভাগ বিভিন্ন শ্রেণির জন্য বিভিন্ন হাসপাতাল
ঠিক করে দিয়েছে। যারা কোর্টের লোকজন, তারা যেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে
টিকা দিতে পারেন। আবার সচিবরা আছেন, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আছেন… সেটাও ভাগ করে
দেওয়া আছে।
“যাতে সুষ্ঠুভাবে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়, ভিড়
না হয়। আমাদের কিছু মন্ত্রী, এমপিরা আছেন… উনাদের আহ্বান
করেছি যেন তারা যার যার এলাকায় টিকা নেন। এছাড়া তাদের জন্য গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল
নির্ধারণ করেছি।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের
আওতায় বাংলাদেশ যে টিকা পাবে, তার প্রথম চালান আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে পৌঁছাতে
পারে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
“কোভেক্স থেকে ছয় কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যাবে।
সেটিও আমরা আশা করছি এপ্রিল-মে মাস থেকে কিছু কিছু পাব। সারা বছর জুড়েই পাব এবং দিতে
থাকব। কাজেই কখন কত টিকা দিলাম সেই হিসাব এখনও দেওয়া ঠিক হবে না।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেন, অনেক দেশ না পারলেও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে টিকা
নিয়ে এসেছে। এরই মধ্যে আনা ৭০ লাখ টিকা সব জেলায় পৌঁছে গেছে। টিকা নেওয়ার জন্য এরইমধ্যে
দেড় লাখের বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন।
“আগে নিবন্ধন একটু স্লো থাকলেও এখন তা বাড়ছে। আমি আজই
জানতে পারলাম প্রায় দেড় লাখ লোক এরইমধ্যে নিবন্ধন করে ফেলেছে। ইদানিং নিবন্ধন খুব বাড়ছে।
আমরা অনুরোধ করব, আপনারা করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করবেন। এর মাধ্যমে আমরা করোনাভাইরাসের
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করব।”
টিকা নিয়ে কাউকে বিভ্রান্তি ছড়াতে, ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না মন্তব্য
করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ এসব বোঝে। মানুষ
টিকা নিয়ে অভ্যস্ত, সবাই টিকা নিয়েছে, একাধিক নিয়েছে। কাজেই এসব আজেবাজে কথা বলে, রিউমার
ছড়িয়ে… যারা রিউমার
ছড়ায়, তারা আসলে দেশের উন্নয়ন এবং মানুষের শান্তি, মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকুক চায়
না। মানুষের জীবনের বিষয় নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলুক আমরা তা চাই না, করতে দেবও না।”
বাংলাদেশে
দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের
টিকা। প্রত্যেককে এই টিকার দুটি ডোজ দিতে হবে।
ইতোমধ্যে
সরকারের কেনা ৫০ লাখ ডোজ এবং উপহার হিসেবে ভারতের পাঠানো ২০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে।
অর্থাৎ এখন সরকারের হাতে আছে ৭০ লাখ ডোজ টিকা।
সেরাম
ইনস্টিটিউটের সঙ্গে সরকারের করা চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে আগামী জুনের
মধ্যে বাকি আড়াই কোটি ডোজ টিকা দেশে পৌঁছানোর কথা।
চলতি
বছরের প্রথমার্ধে কোভ্যাক্স থেকে আরও সোয়া এক কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা পেতে পারে
বাংলাদেশ। সেটাও সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ডের টিকা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য
সংস্থা নেতৃত্বাধীন এই প্ল্যাটফর্ম।
শুরুতে প্রথম মাসে ৬০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও
টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তা কমিয়ে ফেব্রুয়ারিতে ৩৫ লাখ মানুষকে
টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.
এবিএম খুরশীদ আলম জানিয়েছেন।