এ নিয়ে রংপুর নগরীর প্রতিটি পয়েন্টে ডিলারদের সঙ্গে ক্রেতাদের হইচই-হট্টগোল লেগে আছে।
বৃহস্পতিবার কয়েকটি পয়েন্টে টিসিবির বিক্রয় কেন্দ্রে সরেজমিনে দেখা গেছে, টিসিবির বিক্রেতারা চিনি ও ডাল প্রতি কেজি ৫০ টাকা, তেল প্রতি কেজি ৮০ টাকা আরও পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৫ টাকা বিক্রি করছেন।
নগরীর ধাপ এলাকার শিরিন আকতার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজারে তেলের দাম বেশি হওয়ায় টিসিবির বিক্রেতা থেকে তেল কিনতে আসলাম; কিন্তু তেল, ডাল কিনেলই আমাকে ১০ কেজি পেঁয়াজ কিনতে হবে। তা না হলে তেল কিংবা ডাল দেবে না। তাই বাধ্য হয়ে ১০ কেজি পেঁয়াজ কিনলাম।”
পেঁয়াজের দরকার নেই, তবুও তেলের কারণে পেঁয়াজ কিনতে হলো বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ধাপ শিমুলবাগ এলাকার কোহিনুর আকতার কেয়া বলেন, “ভাই আমি এক কেজি ডাল নেওয়ার জন্য আসলাম; কিন্তু আমাকে তো ডাল দিচ্ছে না। কারণ জানতে চাইলে জানানো হলো শুধু ডাল দেবে না, তার সঙ্গে ১০ কেজি পেঁয়াজ কিনতে হবে। আমার তো পেঁয়াজ দরকার নাই, দেশি পেঁয়াজ বাইরে থেকে কয়েকদিন আগে নিয়েছি, আমি আর পেঁয়াজ কী করব!”
তাই কোহিনুর আকতার ডাল না কিনে ফিরে যান বলে জানান।
কাচারীবাজার জিরো পয়েন্টে টিবির কাছ থেকে তেল কিনতে আসা নগরীর বিনোদপুরের বাচ্চু মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কয়েকদিন আগে দুই লিটার তেল, এক কেজি ডাল, দশ কেজি পেঁয়াজ নিয়েছি। তেল ডাল শেষ হয়েছে আর পেঁয়াজ অর্ধেক পচে গিয়েছে।”
পেঁয়াজ পচে যাওয়ার কারণে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, পেঁয়াজগুলো অনেক বড়। আর আগে থেকে কিছু কিছু পেঁয়াজ পচা থাকে। তাই এগুলো দুদিন পর থেকেই পচা শুরু হয়।
“সেই পেঁয়াজ দিয়ে কী করব? ১০ কেজি পেঁয়াজ তো আর দুই/তিন দিনে শেষ হয় না।”
একজন টিসিবির ডিলার নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, “বিদেশ থেকে জাহাজে করে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। সেখান থেকে রংপুর আসে। আসতে প্রায ৫/৬ দিন লাগে এবং রংপুরে এসে গুদামে কয়েকদিন থাকার পর আমাদের দেওয়া হয়। ততদিনে পচন শুরু হয়।”
কয়েকজন ডিলাররা বলছেন, টিসিবি কর্তৃপক্ষ ডিলার প্রতি এক মেট্রিক টন করে পেঁয়াজ বাধ্যতামূলক করেছে। ডিলারদের এই পেঁয়াজ বাধ্যতামূলকভাবে কিনতে হবে।
তারা জানান, তাদের ১৫০ লিটার তেল, ১০০ কেজি চিনি, ১০০ কেজি ডাল কেনার সময় এক হাজার কেজি পেঁয়াজ নিতে হয় টিসিবি থেকে। তাই বাধ্য হয়ে এসব পেঁয়াজ তাদের দিতে হয় ক্রেতাদের।
এ বিষয়ে রংপুর টিসিবির আঞ্চলিক অফিস প্রধান প্রতাব কুমার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পেঁয়াজ আগামী এপ্রিল পর্যন্ত আসতে থাকবে। পেঁয়াজ যেহেতু পচনশীল, সেহেতু আমরা ডিলারদের বলছি সরকার তো জনগণের কথা চিন্তা করে বিদেশ থেকে আমদানি করেছে। সে কারণে সরকার নামমাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে জনগণকে দিচ্ছে।