অভিযোগের ‘প্রমাণ’ পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে
বলা হয়েছে।
বরখাস্তরা হলেন- কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর জ্যেষ্ঠ
জেল সুপার রত্না রায়, জেলার নূর মোহাম্মদ মৃধা।
সুরক্ষা সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শহিদুল্লাহ বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেল সুপার ও জেলারকে ররখাস্ত করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নিতে আইজিপি প্রিজনকে বলা হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি
কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
বাকিদের কি বরখাস্ত করতে বলা হয়েছে- জানতে চাইলে শহিদুল্লাহ বলেন, “মন্ত্রণালয জেল
সুপার ও জেলারকে বরখাস্ত করতে পারে, আর বাকিদের আইজি প্রিজন্সই করতে পারে।”
কতজনকে বরখাস্ত করতে বলা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন,
“সংখ্যাটা সঠিক বলতে পারব না। কারও কারও বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।”
বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “দুটি তদন্ত কমিটি যা যা সুপারিশ করেছে এবং যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে
বলা হয়েছে, ঠিক তাই করা হয়েছে।”
মহামারীর মধ্যে কারাবন্দিদের সঙ্গে বাইরের কারও দেখা করার
সুযোগ না থাকলেও গত মাসের শুরুতে কারা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তুষারের সঙ্গে এক নারীর
সাক্ষাতের ভিডিও প্রকাশিত হলে তা আলোচনার জন্ম দেয়।
এই ছবি ছড়ানোর পরই তৎপর হয় কারা কর্তৃপক্ষ।
এরপর জেল সুপার রত্না রায়, জেলার নূর মোহাম্মদ, ডেপুটি জেলার
গোলাম সাকলাইন, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর মো. আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী
মো. খলিলুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্তের পর কারাবিধি
অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কারা কর্তৃপক্ষ।
বুধবার তদন্ত কমিটি সুরক্ষা বিভাগের
সচিবের কাছে ৪৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে ১৮ কর্মকর্তা ও কারারক্ষীর বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের
কর্মকর্তারা জানান, তদন্ত কমিটি ১৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা, চাকরিবিধি
অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া, কেন্দ্রীয় কারাগারের পরিবর্তে
জেলা কারাগারে পদায়ন করা, কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করাসহ ২৫টি সুপারিশ করেছে।
হল-মার্ক গ্রুপের আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ কেলেঙ্কারির মামলার অন্যতম আসামি তুষার
কাশিমপুর কারাগারে আটক রয়েছেন বেশ কিছুদিন ধরে।
মহামারীর মধ্যে কারাবন্দিদের সঙ্গে বাইরের কারও দেখা করার সুযোগ না থাকলেও গত ৬ জানুয়ারি
দুপুরে কাশিমপুর কারাগারে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এক নারী।
কারা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় কারাগরের ভেতরে তাদের চলাফেরার দৃশ্য সিটিটিভি ক্যামেরায়
ধরা পড়ে।
কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইন কারাগারে থাকার সময়ই
এ ঘটনা ঘটে।