সিএনএন জানায়, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের অভিশংসন ম্যানেজারদের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার একটি চিঠি দিয়ে ট্রাম্পকে শপথ নিয়ে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনা সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে সে অনুরোধই প্রত্যাখ্যান করা হল।
ট্রাম্পের মুখপাত্র জ্যাসন মিলার জানান, “তিনি (ট্রাম্প) অসাংবিধানিক বিচার পক্রিয়ায় কোনও সাক্ষ্য দেবেন না।”
অভিশংসন ম্যানেজার দলের নেতা ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য জ্যামি রাস্কিনের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছিল, ক্যাপিটলে হামলা উস্কে দেওয়ার যে অভিযোগ প্রতিনিধি পরিষদ করেছে ট্রাম্প তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করায় সেনেটে তার সাক্ষ্য নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
রাস্কিন লেখেন, “দুই দিন আগে আপনি একটি জবাব পাঠিয়েছেন। সেখানে আপনি অভিশংসন প্রস্তাবের (আর্টিকেল অব ইম্পিচমেন্ট) অনেক সত্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আপনার সাংবিধানিক অপরাধ সংঘটনের ভুরি ভুরি সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও সমালোচনামূলক তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সত্য অভিযোগ নিয়ে এই বিতর্ক সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে আমি ৬ জানুয়ারির ওই ঘটনা নিয়ে সেনেটে বিচার প্রক্রিয়া চলার সময় কিংবা তার আগে শপথ নিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আপনাকে (ট্রাম্প) লিখিত আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।”
সেনেটে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা রয়েছে মঙ্গলবার। রাস্কিন বিশেষত, আগামী সপ্তাহে সোম এবং বৃহস্পতিবারের মধ্যে কোনও এক সময় ট্রাম্পকে এই সাক্ষ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
কিন্তু তার এই অনুরোধের চিঠি পাওয়ার পরপরই ট্রাম্পের আইনজীবীরা তা প্রত্যাখ্যান করে পালটা তিন-প্যারার একটি চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়, প্রতিনিধি পরিষদ যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবে না, রাস্কিনের অনুরোধে সে লক্ষণই প্রকাশ পেয়েছে।
তাছাড়া, ট্রাম্প এখন আর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বে না থাকায় তার বিরুদ্ধে সেনেটের বিচার প্রক্রিয়াও অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন আইনজীবীরা।
ট্রাম্পের পক্ষ থেকে সেনেটে সাক্ষ্য দিতে অস্বীকৃতির পর ডেমোক্র্যাটরা এখন তাকে অভিশংসন আদালতে হাজির হতে বাধ্য করার চেষ্টা করবে কি না সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদিও এমন কোনও কিছু করার কথা রাস্কিন তার চিঠিতে উল্লেখ করেননি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হবে কি-না সে ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাস্কিন বৃহস্পতিবার কিছু বলেননি। ট্রাম্পের প্রথম দফা অভিশংসনের সময় এমন তলব জারি করা নিয়ে কথা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্পই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যাকে দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসনের বিচারে দাঁড়াতে হচ্ছে। ক্ষমতা ছাড়ার পরও অভিশংসন চলা প্রথম প্রেসিডেন্ট তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি আটকানোর চেষ্টায় ট্রাম্প তার সমর্থকদের ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালাতে উসকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ওই হামলায় পুলিশসহ পাঁচ জন নিহত হন।
সদ্য বিদায় নেওয়া এ প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করতে উচ্চকক্ষের ৫০ রিপাবলিকান সদস্যের অন্তত ১৭ জনকে ডেমোক্র্যাটদের পাশে দাঁড়াতে হবে।