শুক্রবার
দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে এক সংবাদ সম্মেলন
বিথির মা রওশন আরা
বলেন, “এখন বুঝতে পারছি, এটি দুর্ঘটনা ছিল না। বিথিকে কৌশলে হাতিরঝিলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।”
রওশন
আরা জানান, তার মেয়ে বিথি ধলপুর কিন্ডারগার্টেন হাই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। তাদের বাসা গোলাপবাগে। বিথির বাবা একজন চা দোকানি।
গতবছর
১৪ অগাস্ট বিথি পাশের বাসায় তার এক বান্ধবীর সঙ্গে
দেখা করতে যায়। পরে তারা বেড়াতে বের হয়।
রওশন
আরা বলেন, বিথির ফিরতে দেরি হওয়ায় সেদিন অনেকবার ফোন করলেও সে ধরেনি। এক
পর্যায়ে রাসেল নামের এক ছেলে সেই
ফোন ধরে জানায় বিথি দুর্ঘটনায় পড়েছে।
কান্নাজড়িত
কণ্ঠে রওশন আরা বলেন, “খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে বিথিকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পাই। তখন রাসেল জানায় মুগদায় রিকশায় আসার পথে অটোরিকশার ধাক্কায় এ ঘটনা ঘটেছে।”
অচেতন
বিথিকে ঢাকা মেডিকেল থেকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৬ অগাস্ট রাত
১টায় দিকে মারা যায় মেয়েটি।
রওশন
আরা বলেন, বিথি দুই দিন অচেতন ছিল, আসলে কী ঘটেছিল তার
কাছ থেকে তা জানা যায়নি।
তবে তার বান্ধবী বলেছিল, মোটরসাইকেলে করে হাতিরঝিলে ঘুরতে গিয়েছিল তারা।
“নাইম
নামের এক ছেলের মোটরসাইকলে
উঠেছিল বিথি। এক পর্যায়ে বাইক
থেকে তাকে ফেলে দেয় নাইম। এতে সে গুরুতর আহত
হয়।”
ঘটনাস্থল
থেকে বিথিকে তার বান্ধবী ও রাসেল ঢাকা
মেডিকেলে নিয়ে গেলেও নাইম সেখান থেকে ‘পালিয়ে যায়’ বলে রওশন আরার ভাষ্য।
এ
ঘটনায় বিথির বাবা মো. বিল্লাল হোসেন গত ১৬ অগাস্ট
সড়ক দুর্ঘটনা আইনে একটি মামলা করেন। সেখানে নাইম, রাসেল ও বিথির সেই
বান্ধবীকে আসামি করা হয়।
বিথির
মা বলেন, “বারবার পুলিশকে বলা হলেও তারা নিজেদের ইচ্ছায় মামলার এজাহার তৈরি করেছে, আর বিথির বাবা
সাধারণ চায়ের দোকানদার, না বুঝে তাতে
স্বাক্ষর করেছে।”
বিথির
মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করেন তার মা। বিথির খালা ঝর্না বেগমও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের
বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাতিরঝিল থানার এসআই সুব্রত দেবনাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কথাই এসেছে।”
তিনি
বলেন, মহানগর ব্রিজের এক নম্বর সেতুর
ঢালে যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই।
“তবে
আসামি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে
জেনেছি, বিথি নাইমের মোটরসাইকেলের পেছনে বসেছিল এবং অসাবধানবশত মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।”
বিথির
মায়ের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এসআই সুব্রত বলেন, “নাইম, রাসেল- এরা বখাটে। বিথির মা আবেগতাড়িত হয়ে
ওই কথা বলছেন।”