ক্যাটাগরি

শিশুর দুধদাঁত নিয়ে গল্পের বই ‘দাঁতপরীর উপহার’

একটি শিশুর মুক্তো সাদা সুন্দর দাঁতের হাসি সবাইকে নিমিষে সন্তুষ্ট করতে পারে। ৬ থেকে ৮ বছর বয়সে প্রতিটি শিশুর দুধের দাঁত পড়ে যায় এবং স্থায়ী দাঁতের জন্য জায়গা হয়। এতে বাবা-মা চিন্তিত হয়ে পড়েন যখন তাদের বাচ্চা দাঁত ফেলতে ভয় পায়।⠀

⠀প্রতিটি মানব সংস্কৃতিতে শিশুর দুধের দাঁত ফেলাকে ঘিরে কিছু রীতি বা বিশ্বাস জুড়ে আছে। যেমন দাঁতটি রোদে ফেলে দিলে, কোনও ছাদ থেকে বা উপর থেকে ছুড়ে দিলে, পানিতে ছুড়ে দিলে, ইঁদুরের গর্তে স্থাপন করলে কিংবা দাঁতটি একটি গাছ, বাগান বা জমিতে রোপণ করলে নতুন দাঁতগুলো শিশুর মুখে সুন্দর করে বাড়বে। সবচেয়ে প্রচলিত রীতিটি হলো পড়ে যাওয়া দুধের দাঁতটি ইঁদুরকে দিলে শিশুর নতুন স্থায়ী দাঁতগুলো ইঁদুরের দাঁতের মতো শক্ত হবে। ⠀

⠀বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশে শিশুরা এখনও বিশ্বাস করে পড়ে যাওয়া দুধের দাঁত বালিশের নিচে রাখলে দাঁতপরী এসে দাঁতের বিনিময়ে একটি উপহার রেখে যাবেন। এমন গল্প যুগ যুগ ধরে বাবা-মায়েরা তাদের বাচ্চাদের বলে আসছেন। আসলে এটা শিশুসাহিত্যের একটি ধারণা। শিশুদের এসব গল্প বলতেই হয় কেননা তারা দুধের দাঁত ফেলতে ভয় পায়। সাধারণত এ ভয় কাটানোর জন্য দুধের দাঁত নিয়ে কাল্পনিক গল্প তৈরি হয় যাতে বাচ্চারা হাসি-খুশিভাবে দুধের দাঁত ফেলে দিতে আগ্রহ দেখায়।⠀

এ বিষয়টি নিয়েই ঝর্না রহমানের আদরমাখা চিত্রিত বই ‘দাঁতপরীর উপহার’। এ গল্পে সুহার চব্বিশটা দাঁত। একদিন সুহা টের পেল ওর একটা দাঁত তিরতির করে নড়ছে, সেদিন বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিল সে। কাঁদতে কাঁদতে এক দৌড়ে চলে গেল মায়ের কাছে। নিজের আঙুল ছুঁইয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলল, এই দাঁতের ভেতরে পোকা ঢুকে গেছে।

পোকাটা বের করার জন্য মায়ের কাছে সুহার কি যে কাকুতি! মা হেসে বললেন, দাঁতে পোকা নেই। এগুলো দুধের দাঁত। এই দাঁত পড়ে যাবে বলে নড়ছে। তারপর ওই গর্তগুলোতে নতুন দাঁত উঠবে যা আর পড়বে না।

সুহার বাবা নতুন দাঁত দেখবে বলে সুহাকে হা করতে বললেন, আর এক টান দিয়ে নড়বড়ে দাঁতটা তুলে নিলেন।

সুহা ভয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগল। সুহার ভাই সুহাকে কাঁদতে মানা করে বলল, এই দাঁত তো ছোট। তাই দাঁতপরী ছোট দাঁত নিয়ে তোমাকে বড় দাঁত দিবে।

সুহা দাঁতপরীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তিন-চার দিন পর ঝকঝকে বরফের কুচির মতো সাদা একটি দাঁত বেরিয়ে আসে। সুহা ভেবে বলল, দাঁতপরী তাহলে এই দাঁতটাই উপহার দিয়ে গেছে! 

বইটির লেখক ঝর্না রহমানের লেখালেখির শুরু আশির দশকে। ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘কালঠুঁটি চিল’। গল্পের পাশাপাশি কবিতা, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ভ্রমণসাহিত্য, শিশুসাহিত্য, নাটকের জগতেও তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ। চারটি সম্পাদনা গ্রন্থসহ এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশ। ‘ময়ূরপঙ্খি’ প্রকাশিত ‘চাররঙা গল্প’ গ্রন্থমালা ছাড়াও তার রচিত উল্লেখযোগ্য বই ‘জাদুবাস্তবতার দুই সখী’, ‘নিমিখের গল্পগুলো’, ‘পিতলের চাঁদ’, ‘জল ও গোলাপের ছোবল’ ইত্যাদি।

কিডস পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!