রোববার বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমান
বন্দর থানার ওসি বি এম ফরমান আলী এবং সাধারণ সম্পাদক যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাজহারুল
ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে আল-জাজিরার প্রতিবেদন ‘প্রত্যাখ্যান’ করা হয়।
প্রতিবাদলিপিটি হুবুহু
প্রকাশ করা হলো-
আমরা মনে করি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা এই
প্রতিবেদনটি সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক দেশকে অস্থিতিশীল
করার ধারাবাহিক প্রচেষ্টার একটি অপপ্রয়াস মাত্র। প্রতিবেদনটি তৈরির কুশীলব জনাব
ডেভিড বার্গম্যান যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকালে
নানামুখী অপতৎপরতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বিতর্কিত, জনাব জুলকারনাইন সায়ের খান
(সামি ছদ্মনামধারী) মাদকাসক্তির অপরাধে বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে
বহিষ্কৃত একজন ক্যাডেট এবং জনাব তাসনিম খলিল অখ্যাত নেত্র নিউজ-এর প্রধান সম্পাদক,
যিনি বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য
ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছেন। এ সকল বিতর্কিত ব্যক্তিবর্গ অনেক আগ থেকেই তাদের
নিজেদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন এই মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদনটিকে
রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিভেদ ও দূরত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের
সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টির একটি অপপ্রয়াস হিসেবে মনে করে। বাংলাদেশ
পুলিশের প্রতিটি সদস্য দেশের সংবিধান এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সর্বদাই
অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে
অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে বাংলাদেশ পুলিশ। এছাড়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে
বাংলাদেশ পুলিশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’।
বাংলাদেশ যখন অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নয়নের পথে ধাবমান, ঠিক তখনই
আলজাজিরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে
রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন প্রচার করেছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও বিভ্রান্তিমূলক।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) দায়িত্ব
গ্রহণের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় পুলিশের কার্যক্রমকে আরও
গতিশীল করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বাংলাদেশ
পুলিশকে আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক, দুর্নীতিমুক্ত ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী
হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) পুলিশ
সদস্যদের সকল প্রকার অপেশাদার আচরণ রোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছেন।
এক্ষেত্রে কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
করোনাকালে বর্তমান আইজিপির নেতৃত্বে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে নির্ভীক
পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন
করছেন। এ দায়িত্ব পালনকালে এ পর্যন্ত ৮৫ জন পুলিশ সদস্য জনগণের সেবায় প্রাণ
দিয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৯ সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জনৈক ব্যক্তির বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
সেখানে তিনি ডিএমপির এয়ারপোর্ট থানায় ওসি বদলি সম্পর্কে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি তার
বক্তব্যে উৎকোচের বিনিময়ে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার
মহোদয়গণ ওসি পদায়ন করেন মর্মে উল্লেখ করেছেন, যা সর্বৈব মিথ্যা ও বাস্তবতা
বিবর্জিত। বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে ওই ব্যক্তির কোনো ধারণাই
নেই।
মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান এমপি একজন সৎ ও
নির্ভীক মুক্তিযোদ্ধা এবং আদর্শ রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত। থানায়
ওসি পদায়নের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী তিনি কোনভাবেই সম্পৃক্ত নন।
সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য একজন সম্মানিত ব্যক্তি সম্পর্কে এ ধরনের বক্তব্য অনভিপ্রেত ও
অনাকাঙ্খিত। আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) ‘ক্লিন ইমেজের’ একজন চৌকস পুলিশ
কর্মকর্তা হিসেবে সর্বজনবিদিত। পুলিশ প্রধান হিসেবে তিনিও বাংলাদেশ পুলিশের
প্রশাসনিক কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী থানায় ওসি বদলি/পদায়নের ক্ষেত্রে কোনভাবেই সংশ্লিষ্ট
নন। ডিএমপি পুলিশ কমিশনার জনাব মোহা. শফিকুল ইসলাম একজন স্বচ্ছ ও দক্ষ কর্মকর্তা
হিসেবে পরিচিত। দক্ষতা, যোগ্যতা ও পেশাদারিত্বের মাপকাঠির ভিত্তিতে তিনি ওসি
বদলি/পদায়ন করে থাকেন।
আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র
প্রতিরোধের সূচনাকারী বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্র, সরকার ও জনগণের
প্রতি অবিচল আস্থা এবং শ্রদ্ধা রেখে দেশ ও জনগণের কল্যাণে অহর্নিশ কাজ করে
যাচ্ছেন। বাংলাদেশ পুলিশ দেশের যে কোনো প্রয়োজন ও সংকটে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে
অঙ্গীকারাবদ্ধ। আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) এর নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ও
লক্ষ্য পূরণে যখন বাংলাদেশ পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে তখন আল জাজিরায় এ ধরণের
দুরভিসন্ধিমূলক প্রতিবেদন প্রচার খুবই নিন্দনীয়।