রোববার সকাল থেকে সারা দেশে ১০১৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে টিকা নেন।
পরে নিজের অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই টিকার অপেক্ষায় ছিলাম। টিকা দিতে পেরে স্বস্তিবোধ করছি।”
বিশ্বের অন্যসব দেশের মত বাংলাদেশের মানুষও এই মহামারীর মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকার অপেক্ষায় ছিল।
কিন্তু ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা দেশে আসার আগে আগে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ওঠে। নেতিবাচক কিছু রাজনৈতিক প্রচারও তার সঙ্গে যুক্ত হয়।
তবে যুক্তরাজ্যে লাখ লাখ মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার পর তা নিরাপদ ও কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করার পর প্রথম দুদিনে ঢাকায় যে ৫৬৭ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যেও গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা না যাওয়ায় পরিকল্পনা মত রোববার গণ টিকাদান শুরু হয়।
৭৬ বছর বয়সী খায়রুল হক সবাইকে অভয় দিয়ে বলেন, “এই টিকা না দিলে নিজেরই ক্ষতি। সকলকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানান, তাদের কেন্দ্রে রোববার ৮০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। ১০টি বুথের মাধ্যমে এই টিকার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং ঢাকার সাবেক পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও এই কেন্দ্রে টিকা নেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমার তিন বন্ধু বিদেশ রয়েছে। তারা ভ্যাকসিন এক্সপার্ট, তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সুতরাং টিকা নেওয়ার বিষয়ে আমার কোনো ভয় নেই। সবারই টিকা নেওয়া উচিত।”
ভাইরাস রুখে দিতে গণ টিকাদান শুরু
মানুষের ভয় কাটাতে টিকা নিলেন ‘ভিআইপিরা’
তিনি বলেন, দেশের ৭০-৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া গেলে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সুযোগও কমে যাবে।
টিকা নেওয়ার পর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি জানিয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, “আমি বেশ ভালো আছি।”
তিনি বলেন, “অনেক দেশ ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারেনি। আমরা অতি দ্রুত ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পেরেছি। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।”
নিজেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন জানিয়ে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “স্বস্থ্যবিধি মেনে চললে শারীরিকভাবে সবাই সুস্থ থাকব এবং অর্থনৈতিক ভাবে দেশ এগিয়ে যাবে।”
বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হচ্ছে। সবাইকে নিতে হবে দুই ডোজ টিকা।
টিকা নিতে আগ্রহী সবাইকে সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে (www.surokkha.gov.bd) গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। যারা ওয়েবসাইটে গিয়ে বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন না, তারা কেন্দ্রে গিয়েও তা করতে পারবেন।