ছয়টি কোম্পানির শেয়ার রোববারের এই দরপতনে প্রভাব রেখেছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো লেনদেন হয়েছে ১১টি ব্রোকারেজ হাউজে।
টানা অনেক দিন শ্লথ গতিতে চলা পুঁজিবাজার সম্প্রতি বেশ চাঙা হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে আবার পতনের ধারা চললেও রোববার এক ধাক্কায় সূচক আড়াই শতাংশ কমে যায়।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক ডিএসইএক্স ১৪৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫০৫ পয়েন্টে। লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি শেয়ারের মধ্যে ২২৪টিরই দাম কমে যায়।
বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই দরপতন তাদের কাছে অস্বাভাবিক ঠেকছে।
“গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের যে ধারা ছিল তার একটু বাইরে ছিল এই পতন। তাই এর কারণ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”
তিনি বলেন, “রোববার যে দরপতন হয়েছে, সেখানে ৬টি শেয়ারের বেশি অবদান ছিল। আর এই ৬টি শেয়ার ১১টি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে বিক্রি করা হয়েছে।
“এই ১১টি ব্রোকারেজ হাউজ নিয়ম মেনে বিক্রি করেছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”
বিএসইসি মুখপাত্র রেজাউল বলেন, “আর এখন থেকে আমরা পুঁজিবাজারে লেনদেন চলাকালীন আমাদের সার্ভিলেন্স আগের চেয়ে বাড়িয়ে দেব।”
গত দুই সপ্তাহে ডিএসইএক্স মোট ১৮৮ পয়েন্ট হারিয়েছে।
রোববার ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সূচক ৪১৪ পয়েন্ট বা ২.৫৩ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে লেনদেন শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে সূচক কমতে শুরু করে। সূচকে এই নিম্নগতি চলে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। একই ধারা ছিল সিএসইতেও।
ঢাকার বাজারে লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে ২২৪টির দাম কমেছে, বেড়েছে মাত্র ৪৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৬টির।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে ১৫০টির দাম কমেছে, ২৭টির বেড়েছে এবং ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ঢাকার বাজারে এদিন হাতবদল হয়েছে ৭৭১ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড, যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় ৫৮ কোটি টাকা বেশি।
চট্টগ্রামের বাজারে লেনদেন ১১ কোটি টাকা বেড়ে ৪৪ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে।
কোভিড-১৯ টিকার আমদানিকারক বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার এদিন বড় ধরনের দর হারিয়েছে। প্রায় ৮ শতাংশ কমে লেনদেন শেষ হয়েছে ১৬৩ টাকা ৬০ পয়সায়।
বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার ৯ শতাংশের বেশি দর হারিয়ে লেনদেন শেষ করেছে ৭৫ টাকা ২০ পয়সায়।
বাজারের দর হারানোর তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড এবং দশম স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মা।
দর হারানোর তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলো হলো- সিএপিএমআইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড, মীর আক্তার, এসপি সিরামিকস, অ্যাপোলো ইস্পাত, জিকিউ বলপেন, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সাইফ পাওয়ার ও ফুয়াং সিরামিক।
বাজারে বড় ধরনের দরপতন হলেও বীমা খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দাম বেড়েছে।
দাম বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় রয়েছে- মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্স, প্রিমিয়ার ইন্সুরেন্স, মতিন স্পিনিং, তাকাফুল ইন্সুরেন্স, রিপাবলিক ইন্সুরেন্স, বিকনফার্মা, সোনার বাংলা ইস্সুরেন্স, প্রগতি ইন্সুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্স ও ইসলামি ইন্সুরেন্স।
এদিন ঢাকার বাজারে লেনদেনে শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান ট্যোবাকো, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, রবি, বেক্সিমকো ফার্মা, মীর আক্তার, বিডি ফাইন্যান্স, লাফার্জ হোলসিম, সামিট পাওয়ার ও এনার্জিপ্যাক লিমিটেড।