ক্যাটাগরি

ফটো সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে এক মামলায় অভিযোগপত্র

হাজারীবাগ থানার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

কাজলের অন্যতম আইনজীবী জাহিদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই ফটো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।

বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওসমান আরা বেলী গত বছর ১০ মার্চ হাজারীবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

যুব মহিলা লীগের নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে ‘জড়িতদের’ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গতবছরের ৯ মার্চ ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর।

একই ঘটনায় পরদিন হাজারীবাগ থানায় মামলা করেন ওসমান আরা বেলী। আর ১১ মার্চ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেক সদস্য সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা কামরাঙ্গীর চর থানায় আরেকটি মামলা করেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ তিন মামলাতেই আসামির তালিকায় কাজলের নাম ছিল।

এক সময় দৈনিক সমকাল ও বণিক বার্তায় ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করা কাজল ‘পক্ষকাল’ নামের একটি পাক্ষিক পত্রিকা সম্পাদনা করছিলেন। মামলা হওয়ার পরদিন ১০ মার্চ বকশিবাজারের বাসা থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তিনি।

পরদিন কাজলের স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী চকবাজার থানায় গিয়ে একটি জিডি করেন। ১৮ মার্চ কাজলের সন্ধান চেয়ে চেয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা করেন তাদের ছেলে মনোরম পলক।

এজাহারে অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে লেখালেখির কারণে অজ্ঞাতনামা কেউ তাকে ‘অপহরণ’ করেছে।

এক সময়ের জাসদ ছাত্রলীগ নেতা কাজলের সন্ধান দাবিতে তার পুরনো রাজনৈতিক সহকর্মী, স্বজন ও সাংবাদিকদের আন্দোলনের মধ্যে সম্প্রতি কাজলের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

ওই ভিডিওতে কাজলকে একটি জায়গায় রাস্তার পাশে মোটরসাইকেল রেখে পাশের কোথাও যেতে দেখা যায়। বেশ কিছুক্ষণ ফিরে এসে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান তিনি। এর মধ্যে তার ওই মোটরসাইকেল ঘিরে কয়েকজনকে তৎপরতা চালাতে দেখা যায়।

প্রায় দুই মাস পর গত বছরের ২ মে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে কাজলকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় বিজিবি। তার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়।

যশোর থেকে ঢাকায় আনার পর গতবছরের ২৩ জুন কাজলকে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের মুখোমুখি করা হয়। হাকিম আদালত সেদিন কাজলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে।

পরে হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানার মামলাতেও কাজলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করে।

গতবছরের ২৪ আগস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত কাজলের জামিন আবেদন নাকচ করলে তিনি ৮ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টে আবেদন করেন।

সেই আবেদনে গত ২৪ নভেম্বর এবং এরপর ১২ ডিসেম্বর তিন মামলায় হাই কোর্ট থেকে জামিন পান কাজল। সাত মাস কারাগারে থাকার পর ২৫ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান কাজল।

তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্য দুই মামলায় এখনও তদন্ত প্রতিবেদন দেয়নি পুলিশ।

 

পুরনো খবর

মুক্তি মিললো ফটো সাংবাদিক কাজলের
 

নিম্ন আদালতে জমা কাজলের জামিননামা, শুক্রবার মুক্তির আশা
 

হাই কোর্টে জামিন মিললো ফটো সাংবাদিক কাজলের
 

সাংবাদিক কাজলের ঈদ কাটছে কারাগারে, এজাহার নিয়ে প্রশ্ন
 

সাংবাদিক কাজলকে পাওয়া গেল বেনাপোল সীমান্তে