পাকিস্তানি সামরিক হেলিকপ্টারগুলো তল্লাশি অব্যাহত রাখলেও তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পাকিস্তানের মুহাম্মদ আলী সাদপারা (৪৫), আইসল্যান্ডের জন স্নোরি (৪৭) ও চিলির হুয়ান পাবলো মোরকে (৩৩) শেষবার শুক্রবার দুপুরের দিকে শৃঙ্গটির আরোহণ পথের সবচেয়ে বিপজ্জনক অংশ বলে বিবেচিত ‘বোটলনেক’ এলাকায় দেখা গিয়েছিল। এই ‘বোটলনেক’ ৮ হাজার ৬১১ মিটার (২৮ হাজার ২৫১ ফুট) উচ্চতার পবর্ত শৃঙ্গটির মধ্যে থাকা খাড়া সংকীর্ণ একটি হিমবাহের খাত।
হেলিকপ্টার সর্বোচ্চ যতো উচ্চতায় উঠতে পারে এটি তার চেয়েও একটু বেশি উপরে অবস্থিত। তারপরও হেলিকপ্টারগুলো ওই বিপজ্জনক উচ্চতায় তিন দিন ধরে তাদের খোঁজ করছে।
সাদপারা পাকিস্তানের অন্যতম সবচেয়ে খ্যাতিমান পর্বতারোহী। তিনি বিশ্বের আটটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেছেন। এবারের যাত্রায় সঙ্গে তার ২০ বছর বয়সী ছেলেও ছিল, কিন্তু ছেলের অক্সিজেন মাস্কে ত্রুটি দেখা দিলে তাকে নিচে নেমে যেতে বলেছিলেন সাদপারা।
রোববার ওই ছেলে জানান, ‘বোটলনেকের’ নিচে ক্যাম্পে এসে তিনি সারারাত অপেক্ষা করেন, ওই তিন জন চূড়ায় ওঠার পর নেমে আসবেন বলে বিশ্বাস ছিল তার।
শীতকালে কে-টুর চূড়ায় উঠে ইতিহাস গড়ল নেপালি পবর্তারোহীরা
“রাতে আমি আমার তাঁবুর লাইট জ্বালিয়ে রেখেছিলাম, তারা ফিরে আসলে সেটি দেখতে পাবে বলে ভেবেছিলাম,” বলেন তিনি।
“আমার মনে হয়, তারা যদি লাশের খোঁজ করে তাহলে অভিযান চালিয়ে যাওয়া ঠিক আছে, কিন্তু তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা, আপনি যদি শীতের মধ্যে দুই বা তিন দিনের জন্য আট হাজার মিটার উপরে থাকেন, কোনো ব্যক্তির বেঁচে থাকার সুযোগ তেমন নেই।”
দলটি এই শীতে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কে-টু তে ওঠার চেষ্টা করেছিল। চলতি ঋতুতে ওই এলাকায় ইতোমধ্যে আরও তিন পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে।
৫ ফেব্রুয়ারি বুলগেরিয়ার নাগরিক আতানাস স্কাতভের লাশ হেলিকপ্টারে করে তুলে আনা হয়। তিনি কে-টুতে ওঠার চেষ্টা করার সময় পড়ে গেছেন বলে বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
১৬ জানুয়ারি নেপালের ১০ জনের একটি পর্বতারোহী দল প্রথমবারের মতো শীতকালে কে-টুর চূড়ায় উঠে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেন।
ওই একইদিন স্পেনের পর্বতারোহী সেরহিও মিঙ্গোতে (৪৯) বেইস ক্যাম্পে ফিরে আসার সময় পিছলে হিমবাহের খাদে পড়ে নিহত হন।
ওই একই মাসে মার্কিন পর্বতারোহী অ্যালেক্স গোল্ডফার্ব-রুমিয়ানজেভ নিকটবর্তী আট হাজার ৪৭ মিটার উঁচু আরেকটি চূড়ায় উঠতে গিয়ে মারা যান।
‘নিষ্ঠুর পবর্ত’ হিসেবে পরিচিত কে-টুতে ২০০৮ সালে তুষারধসে দুই দিনে ১১ জন পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছিল।