তারাসহ এখনও প্রায় ১৯৭ জন নিখোঁজ আছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত রোববার উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চামোলি জেলার জোশিমঠে হিমবাহ ধসে কাছের অলকনন্দা ও ধউলিগঙ্গা নদীতে প্রবল হড়পা বান দেখা দেয়, পানির তোড়ে পাঁচটি ঝুলন্ত সেতু ভেসে যায়, ঘরবাড়ি ও নিকটবর্তী এনটিপিসি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়; ঋষিগঙ্গার কাছে তপোবন বিষ্ণুগাদ হাইড্রোলিক পাওয়ার প্রজেক্টও ধ্বংস হয়ে যায়।
পানি পরিবহনের জন্য দুইটি সুড়ঙ্গপথের মাধ্যমে মূল ভূমির সঙ্গে তপোবন বিষ্ণুগাদ হাইড্রোলিক পাওয়ার প্রজেক্টের সংযোগ ছিল। ওই দুই সুড়ঙ্গের বড়টির (৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার লম্বা) মধ্যে ৩৫ নির্মাণ শ্রমিক আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার লম্বা সরু সুড়ঙ্গটি ধউলিগঙ্গা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। হিমবাহ ধসের পর প্রবল পানির তোড়ে দুই সুড়ঙ্গের মুখই পাথর, কাদা ও সেখানে থাকা নির্মাণসামগ্রীর ধ্বংসাবশেষ দিয়ে আটকে যায়। সরু সুড়ঙ্গ থেকে দুর্ঘটনার প্রায় সাত ঘণ্টা পর ১২ শ্রমিককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
#WATCH: Indo-Tibetan Border Police personnel rescued people who were trapped in a tunnel in Chamoli on 7th February.
Rescue operation is underway at another tunnel where around 35 people are trapped, as per DGP Uttarakhand.
(Video source: ITBP) pic.twitter.com/x4EexJkjL7
— ANI (@ANI) February 9, 2021
কিন্তু বড় সুড়ঙ্গে প্রায় ৩৫ শ্রমিক আটকা পড়ে আছেন বলে জানান উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ড্রিল করে দড়ির সাহায্যে তাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।”
সুড়ঙ্গের ভেরত পানি এবং প্রচুর পরিমাণ কাদা আটকে যাওয়ায় উদ্ধারকর্মীরা আটকাপড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না বলে জানায় ইন্দো-তিবেটান বর্ডার পুলিশ।
রোববার থেকে আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি। তারা এত বড় টানেলের কোথায় আটকা পড়ে আছেন, একসাথে আছেন নাকি বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন তার কিছুই এখনও জানা যায়নি।
দুর্ঘটনার পর দুইদিন পেরিয়ে গেছে। প্রচণ্ড ঠান্ডা পানির মধ্যে তাদের বেঁচে থাকার আশা দিন দিন ক্ষীণ হয়ে আসছে। উদ্ধারকর্মীরা ড্রিল করে টানেলের মুখ খোলার চেষ্টা করছেন।
তপোবন বিষ্ণুগাদ হাইড্রোলিক পাওয়ার প্রজেক্টটির কাজ ২০২৩ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। ছোট সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার পাওয়া এক শ্রমিক হাসপাতালের বিছানায় বসে নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুনতে পাই কেউ চিৎকার করে বলছে, বেরিয়ে যাও, বেরিয়ে যাও। বুঝতে পারছিলাম না কি ঘটছে। আমরা বেরোনোর জন্য দৌড়াতে শুরু করি। কিন্তু আমরা পৌঁছানোর আগেই প্রবল পানির স্রোত সুড়ঙ্গের মুখে ঢুকে পড়ে এবং আমাদের ঠেলে ভেতরে নিয়ে যায়।
‘‘আমরা ছাদ ধরে ছিলাম। আমরা প্রায় এক ঘণ্টা ছাদ আঁকড়ে ছিলাম। তারপর পানি কমে গেলে আস্তে আস্তে ছাদ থেকে নেমে বড় পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস নেই। আমরা বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। ভাবিনি আমরা বেঁচে ফিরব।”