তবে
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত না করে আদালত
তাতে স্থিতাবস্থা জারি করেছে। ফলে এই তিন শিক্ষকের
বরখাস্ত ও অপসারণের আদেশই কার্যকর থাকছে বলে মনে করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
ওই
তিন শিক্ষকের রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান
মিয়া ও বিচারপতি মো.কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়।
আবেদনের
পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ এম রাসেল চৌধুরী।
পরে
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, “উচ্চ আদালত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত ২৮ জানুয়ারির আদেশের
বিরুদ্ধে রুল নাইশাই জারি করেছেন। একই সঙ্গে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন।”
ডেপুটি
অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ এম রাসেল চৌধুরী
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “রিট আবেদনে ওই তিন শিক্ষক
বরখাস্ত ও অপসারণের সিদ্ধান্ত
স্থগিত চাওয়া হয়েছিল। আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সিদ্ধান্তের বৈধতা
প্রশ্নে রুল জারি করলেও অন্তবর্তী আদেশ দিয়ে সেটি স্থগিত করেনি। তবে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। ফলে তারা (তিন শিক্ষক) বরখাস্ত ও অপসারণ অবস্থাতেই
থাকবেন।”
গত
বছর জানুয়ারিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেতন-ফি কমানো, আবাসন
সংকট সমাধানসহ পাঁচ দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করেন।
তাতে
সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তুলে গত ২৩ জানুয়ারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তিন শিক্ষককে বরখাস্ত ও অপসারণের সিদ্ধান্ত
হয়। পরে গত ২৮ জানুয়ারি
এ বিষয়ে চিঠি সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার।
ওই
চিঠি প্রত্যাহার চেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টদের উকিল নোটিস দেন বরখাস্ত হওয়া বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী শিক্ষক মো. আবুল ফজল, ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের
প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী ও বাংলা ডিসিপ্লিনের
প্রভাষক শাকিলা আলম।
কিন্তু
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তে অটল থাকলে তা চ্যালেঞ্জ করে
গত ৩ ফেব্রুয়ারি হাই
কোর্টে রিট আবেদন করেন তারা।
সরকারি
চাকরি বিধি অনুযায়ী, বরখাস্ত হলে তারা অন্য কোনো সরকারি চাকরি করতে পারবেন না। অপসারিত হলে করতে পারেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের
অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানকে ২০১০ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য নিয়োগ
দেয় সরকার। ২০১২ সালে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
এরপর দুই মেয়াদে ১০ বছর দুই
মাস উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষে গত ২৮ জানুয়ারি
বিকালে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।
মেয়াদের শেষ দিকে এসে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে
বেতন-ফি কমানো এবং
আবাসন সংকট নিরসনসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জের ধরে দুই ছাত্রকে বরখাস্ত এবং তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়।
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ওই দুই ছাত্র
নয় দিন অনশন চালিয়ে আসার পর ২৬ জানুয়ারি
তাদের শরবত খাইয়ে অনশন ভাঙান উপাচার্য ফায়েক উজ্জামান। ২৮ জানুয়ারি তাদের
বহিষ্কারাদেশ মওকুফের কথা জানিয়ে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তবে যে তিন শিক্ষককে
চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি। ছাত্রদের অনশন ভাঙানোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, যে ইস্যুতে কথা
বলছেন তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তিনি খুশি হবেন।