ক্যাটাগরি

দীপন হত্যার রায় বুধবার, সর্বোচ্চ শাস্তি চায় রাষ্ট্রপক্ষ

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী
বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় দেবেন। আট আসামির সবার সর্বোচ্চ
সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।

নিহত দীপনের বাবা ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক রায় দেখে তার প্রতিক্রিয়া
জানাবেন।

তিনি মঙ্গলবার বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রায়ের বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। রায় দেখে তারপর
প্রতিক্রিয়া জানাব।”

এই মামলার আসামিরা
হলেন- বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে
হাসিব, মইনুল হাসান শামীম, আ. সবুর, খাইরুল ইসলাম, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হুসাইন
ওরফে সায়মন ও শেখ আব্দুল্লাহ।

এরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি
সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য বলে পুলিশের ভাষ্য।

আসামিদের মধ্যে জিয়া
ও আকরাম পলাতক রয়েছে, বাকিরা কারাগারে। গ্রেপ্তার সবাই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা স্বীকার
করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের
আইনজীবী এবং ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ার খান জাকির বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ
থেকে সাক্ষ্য প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত
অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি বলে মনে করি। আশা করছি, আমাদের প্রত্যাশা
অনুযায়ী সব আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডই হবে।”

তিনি এই আশা প্রকাশ
করলেও দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমানের অসন্তোষ রয়েছে দুই আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায়।

তিনি কয়েক দিন আগে
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “জিয়া ও আকরাম পলাতক। মূল হোতাই তো এই দুজন।
সুতরাং আসলে এদেরকে ধরতে না পারলে, এদের বিচারটা না হলে পুরো প্রক্রিয়াই অসম্পূর্ণ
থেকে যাচ্ছে।”

২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারি
সেনাবাহিনী এক সংবাদ সম্মেলনে সরকার উৎখাতে ধর্মান্ধ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার একটি অভ্যুত্থান
পরিকল্পনা নস্যাৎ করার খবর দেয়। অভ্যুত্থানচেষ্টাকারীদের নেতা হিসেবে জানানো হয় মেজর
জিয়ার নাম।

তখন সেনাবাহিনী থেকে
বরখাস্ত হওয়া জিয়া পালিয়ে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামে যুক্ত হন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে
বলা হচ্ছে। তদন্তকারীদের ভাষ্য মতে, এই জঙ্গি দলের সামরিক কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা
জিয়ার পরিকল্পনা ও নির্দেশেই দীপনকে হত্যা করা হয়। 

বাংলাদেশে লেখক-প্রকাশক,
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর ধারাবাহিক হামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর আজিজ সুপার
মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে আক্রান্ত হন দীপন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের ছেলে দীপনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।

দীপনকে হত্যার পর ওই
দিনই তার স্ত্রী রাজিয়া রহমান শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিন বছর পর ২০১৮
সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা
গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ফজলুর রহমান।

২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর
অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার ওই আট আসামির বিচার শুরু হয়। জিয়াসহ দুই আসামিকে পলাতক
দেখিয়ে বিচার শুরুর এক বছর তিন মাসের মাথায় আলোচিত এ মামলা রায় ঘোষণা হচ্ছে।                      

মামলায় ২৬ সাক্ষীর
মধ্যে ২৩ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

গত ১৭ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ
তাদের যুক্তিতর্ক উপ স্থাপন করে৷ এ সময় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান তারা।
পরে আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করলে রায়ের জন্য রাখেন বিচারক।