ক্যাটাগরি

রিমান্ডে পি কে হালদারের সহযোগী অনিন্দিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু

মঙ্গলবার দুপুরে কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে দুদকের
প্রধান কার্যালয়ে আনার পর কমিশনের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন তাকে
জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন।

দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত
প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অনিন্দিতাকে রমনা থানার হাজতখানায় রাখা হয়েছে বলে
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান।

তিনি বলেন, “বুধবার সকাল থেকে অনিন্দিতা
মৃধার দ্বিতীয় দিনের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে।”

গত ২১ জানুয়ারি পি কে হালদারের ব্যক্তিগত আয়কর
আইনজীবী সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধাকে গ্রেপ্তার করে দুদক।

আদালতে হাজির করা হলে তাদের তিন দিন করে রিমান্ডে
নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক।

বাবা-মেয়েকে গ্রেপ্তারের দিন দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন
হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “পি কে হালদার বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর তার অবৈধ
সম্পদ দেখাশোনা করতেন সুকুমার ও অনিন্দতা মৃধা। পিকে হালদারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট
কিছু প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানও করতেন সুকুমার।

“পি কে হালদার ভুয়া ঋণ দেখিয়ে অবৈধভাবে অর্জিত
প্রায় ১০০ কোটি টাকা তার মা লিলাবতী হালদারের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে রাখেন। পরে
লিলাবতী হালদারের ব্যাংক হিসাব থেকে সুকুমার মৃধা, অবন্তিকা বড়াল ও অনিন্দিতা
মৃধার মাধ্যমে আবার তা পি কে হালদারের কাছে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করা হয়। এভাবে
তারা মানিলন্ডারিং করেছেন বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য পেয়েছেন।”

এছাড়া সুকুমার মৃধার প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পদ
এবং তার মেয়ে অনিন্দিতার প্রায় দেড় কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে
দুদক সচিব বলেছিলেন, “এসব আসলে পি কে হালদারের অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ।”

এদিকে সোমবার অনিন্দিতা মৃধা, তার বাবা সুকুমার
মৃধা ও মা তাপসী রাণী শিকদারসহ পি কে হালদারের পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ
অর্জন ও অর্থ পাচারের’ অভিযোগে একটি মামলা করেছে দুদক।

মামালার আসামিদের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকার
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এনআরবি গ্লোবাল
ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের
বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার
থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়,
বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি
ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

এই চার কোম্পানি হল-
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং
অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড
এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।

এসব কোম্পানি থেকে তিনি
ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য।

এর মধ্যে আইএলএফএসএল
গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক
তার ২৭৫ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।

দুদক কর্মকর্তারা
বলছেন, পি কে হালদার তার নিজের, আত্মীয়দের, বন্ধু ও কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে
আটটি কোম্পানিতে ৬৭ কোটি ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার ১৯৯ টাকা বিনিয়োগ করেছেন, যার ‘বৈধ কোনো
উৎস’ অনুসন্ধানে মেলেনি।

পি কে হালদারকে
গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে। তার মা
লীলাবতী হালদার এবং অবন্তিকা বড়ালসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হাই
কোর্ট।