ক্যাটাগরি

শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী গণসমাবেশের ডাক

মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন জোটের নেতারা।

তাদের দাবিগুলো হল-

# সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ-নারীর প্রতি সহিংসতায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ‘ব্যর্থ’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।

# পাহাড়-সমতলে আদিবাসী নারীদের ওপর সামরিক-বেসামরিক সব ধরনের যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।

# হাই কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে।

# ধর্মীয়সহ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নারীবিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞাপনে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে বিটিসিএলের কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে। সুস্থ ধারার সাংস্কৃতিক চর্চায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।

# তদন্তকালীন সময়ে ভিকটিমকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ভিকটিমের আইনগত ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

# অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে অনিষ্পন্ন সব মামলা দ্রুত নিষ্পন্ন করতে হবে।

# ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭২-১৫৫ (৪) ধারা বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনকে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।

# পাঠ্যপুস্তকে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক যে কোনো প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দ চয়ন পরিহার করতে হবে।

এবং

# গ্রামীণ সালিশের মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, “নয় দফা দাবিতে আমরা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছি। কিন্তু অনবরত দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আমরা মনে করি, ৯ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলেই নিরাপদ সমাজ গড়া সম্ভব হবে।”

তিনি বলেন, “পাড়ায় পাড়ায় গণকমিটি করে ধর্ষণ প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। ধর্ষণের মনস্তত্ত্ব তৈরি ও নারীকে ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীতে নারী-পুরুষের সমতার সমাজ বিধানের লড়াই প্রয়োজন।”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি শিলা দত্ত, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন।