এই রায় দেশে আইনের শাসনের জন্য ভালো হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক।
বাংলাদেশে মুক্তমনা লেখক, ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ওপর ধারাবাহিক হামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে আক্রান্ত হন দীপন। গলাকেটে হত্যা করা হয় তাকে।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আট আসামির সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
দীপন হত্যায় আট জঙ্গির ফাঁসির রায়
রায় শুনে কাঁদলেন দীপনের স্ত্রী
আসামিরা হলেন- বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার এবং শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর দীপন খুন হওয়ার পর ভেঙে পড়েন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
এদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক। বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তারা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য বলে পুলিশের ভাষ্য।
রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর যখন দীপনকে হত্যা করা হয় তখন বিভিন্ন মিডিয়ায় টেলিভিশন খুললে দেখা যেত হত্যার শিকাদের বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের কান্নাকাটি। এই বিচার শূন্যতার মধ্যে দীপন যখন নিহত হল তখন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সে খবর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশিত ও প্রচারিত হল।
“জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বললেন, শুধু বই প্রকাশের কারণে প্রকাশক হত্যার দৃষ্টান্ত এর আগে পাওয়া যায়নি। তিনিসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান দোষীদের। দেশেরও সকল মহল থেকে দাবি ওঠে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। ওই অবস্থায় সরকারের ওপর চাপ ছিল দীপনের হত্যার বিচার তাড়াতড়ি শুরু করার।”
বিচার শুরু হওয়ার আগে দীর্ঘ দিন মামলার তদন্ত চলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “একটা পর্যায়ে এসে তারা হত্যাকারীদের অবশেষে ধরতে পারে এবং তাদেরকে আসামি করে ডিবির একজন কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।”
জঙ্গিদের হাতে নিহত অন্যদের বিষয়েও এ ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত কি না সেই প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, “যদি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, এরা হত্যাকারী বা হত্যার সঙ্গে যুক্ত তবে অবশ্যই তাদের এ রকম শাস্তি হওয়া উচিৎ।
“দেশে আইনের শাসন তাতে ভালো হবে।”