সেই সঙ্গে এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে ২০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শাহ আলমের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে উচ্চ আদালত।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাই কোর্টে বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি।
মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে ফাতেমা বেগমের বিয়ে হয় ২০০৭ সালে। নির্যাতনের অভিযোগ তুলে কয়েক বছর পর ফাতেমা চলে যান। পরে ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা বেগম তার স্বামী জাকির হোসেনকে তালাক দেন।
এরপর ফাতেমা বিয়ে করেন সাবেক স্বামী জাকিরের বোনজামাই শাহ আলমকে। এ অবস্থায় ফাতেমা বেগমকে অপহরণের অভিযোগে ২০১২ সালের ৫ মে পাথরঘাটা থানায় শাহ আলমসহ আটজনকে আসামি করে মামলা করেন মো. জাকির হোসেন।
পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের সবার বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ আগস্ট অভিযোগপত্র দেয়। পরে ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়।
ফাতেমা বরগুনার পাথরঘাটার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমাকে শাহ আলম অপহরণ করেননি। শাহ আলমকে আমি মাস খানেক আগে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি।
“২০০৭ সালে জাকিরের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু জাকিরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শাহ আলমকে বিয়ে করি। তবে দ্বিতীয় বিয়ের ৪/৫ মাস আগে জাকিরকে তালাক দেই। সে এখন আর আমার স্বামী নয়। আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।”
কিন্তু বিচার শেষে গত বছর ১৪ ডিসেম্বর বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান আসামি শাহ আলমকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন।
বাকি ৭ আসামির প্রত্যেককে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ে বলা হয়, ফাতেমা যে জবানবন্দি দিয়েছেন তা ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’। ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় আদালতের মনে হয়েছে, তালাক না দিয়েই তিনি শাহ আলমের কাছে চলে যান। আইনের চোখে এটা ‘অপরাধ’।
এ রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন শাহ আলম। সঙ্গে জামিন চেয়েও আবেদন করেন তিনি।
হাই কোর্টে শাহ আলমের সে আপিলটি গ্রহণ করার পাশাপাশি তার জামিন মঞ্জুর করেছে বৃহস্পতিবার।
তার আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির জানান, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শাহ আলমকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
“শাহ আলমের বিরুদ্ধে তার সাবেক স্ত্রীর (জাকির হোসেনের বোন) যৌতুক আইনে ৩ বছরের আরেকটি কারাদণ্ডাদেশ রয়েছে। সেটায় জামিন হলেই শাহ আলম মুক্তি পাবেন।”
শাহ আলম বছর খানেক আগে তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন বলে জানান বর্তমান স্ত্রী ফাতেমা বেগম।