ক্যাটাগরি

‘৫ কোটি টাকার সম্পদ লুকিয়েছেন’ পাপিয়া ও তার স্বামী

বৃহস্পতিবার কমিশন এই অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে
জানিয়ে দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, এই দম্পতির বিরুদ্ধে ৫ কোটি ৮৪ লাখ
১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “শামীমা নূর পাপিয়া
ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে
তাদের অপরাধলব্ধ আয়ের দ্বারা পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার সম্পদ দখলে রাখায়
কমিশন চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে।”

অভিযোগপত্র ‘শিগগিরই’ আদালতে দাখিল করা হবে
বলে জানান তিনি।

এর আগে গত বছরের ৪ অক্টোবর পাপিয়া-মতি সুমনের
বিরুদ্ধে ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ মামলা করে দুদক।

কমিশনের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ এ মামলার
তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে চার মাসের মধ্যে কমিশনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

মামলার অভিযোগ, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে
গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের প্রেসিডেনসিয়াল স্যুট এবং চেয়ারম্যান
স্যুটসহ ২৫টি কক্ষে অবস্থান করে খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, বারের ব্যয় বাবদ মোট তিন
কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬০ টাকা বিল পাপিয়া নিজেই নগদ পরিশোধ করেন।

পাপিয়া ‘বিলাসবহুল জীবন যাপন পছন্দ করতেন’
উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, ওয়েস্টিন হোটেলে থাকাবস্থায় তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা
করেছেন। এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মাসিক ৫০ হাজার
টাকা করে ৩০ লাখ টাকা বাসা ভাড়া দিয়েছেন। গাড়ির ব্যবসায় এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে
কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন।

এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে পাপিয়া ও তার স্বামীর
নামে ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা আছে বলে দুদক খোঁজ পেয়েছে।

র‌্যাব তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার নগদ
টাকা উদ্ধার করে। সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের একটি গাড়ির কথাও জানা যায়,
যার দাম ২২ লাখ টাকা।

দুদকের মামলায় বলা হয়, “এসব অর্থ তারা অপরাধজনক
কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আয় করেছেন, যা তাদের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ।”

গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামী
মফিজুর রহমানকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঢাকা ও নরসিংদীতে
পাপিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব।

সে সময় র‌্যাবের তরফ থেকে বলা হয়, পাপিয়া গুলশানের
ওয়েস্টিন হোটেল ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে
বিল দিতেন কোটির টাকার উপরে।

গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে
জাল নোটের একটি এবং অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র‌্যাব। আর মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ
আইনে সিআইডি আরেকটি মামলা করে। এরপর দুদকও পাপিয়ার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামে।