দণ্ডিত আলী আকবর ইকবাল (৩০) বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইকবালের ছেলে। এই পিতা-পুত্রের বিরুদ্ধে এক যুবলীগ কর্মীকে হত্যার মামলাও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের এডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দিন মুরাদ বিচারকের ওপর হামলার দায়ে আলী আকবর ইকবালকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা না দিলে আরও এক মাস কারাভোগ করতে হবে আকবরকে। মামলার অপর আসামি হাসান আলী জিসানকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামে উল্টো পথে মটরসাইকেল, প্রতিবাদ করায় বিচারকের উপর হামলা
চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন হত্যায় হাজী ইকবালের ছেলেসহ গ্রেপ্তার ৪
মহিউদ্দিন হত্যা: হাজি ইকবালসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
রায় ঘোষণার পর আকবরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী সাহাবুদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন।
গত বছরের ২০ ডিসেম্বর বিকালে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে উল্টো পথে মটরসাইকেল চালানোর প্রতিবাদ করায় চট্টগ্রামের পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ জহির উদ্দিনের ওপর হামলা হয়।
সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, আলী আকবর ও হাসান আলী জিসান নামে দুই যুবক আউটার রিং রোডে উল্টো পথে মটরসাইকেল চালিয়ে আসেন। এ সময় বিচারক ওই পথ দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন।
মটরসাইকেল বিচারকের গাড়ির সামনে পড়লে তিনি উল্টো পথে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর বিষয়ে জানতে চান। তখন তারা ওই বিচারকের ওপর হামলা চালান। তাতে যুগ্ম জেলা জজ জহির উদ্দিন হাতে আঘাত পান।
পরে সেখানে উপস্থিত লোকজন হামলাকারীদের আটকে পুলিশে দেয়।

আলী আকবর ইকবাল, ফেইসবুক থেকে নেওয়া ছবি।
পরদিন বিচারকের গাড়িচালক বাদী হয়ে আকবর ও জিসানকে আসামি করে মামলা করেন। পতেঙ্গা থানার এসআই মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী তদন্ত শেষে ২ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ৬ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দুই আসামির বিচার শুরু হয়।
মামলায় আটজনকে সাক্ষী করা হয়, যাদের মধ্যে বিচারকও ছিলেন। সবার সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্ক উপস্থান শেষে ঘটনার এক মাস ২০ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণা হল। অপর আসামি জিসানকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী সাহাবুদ্দিন আহমদ জানান।
আকবরের বাবা হাজী ইকবালকে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ১০ বছর আগে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে এলাকায় এখনও তিনি আওয়ামী লীগ নেতা পরিচয় দেন।
২০১৮ সালের ২৬ মার্চ দুপুরে হালিশহর মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বৈঠক চলাকালে খুন হন যুবলীগকর্মী মহিউদ্দিন।
ওই হত্যা মামলায় হাজী ইকবাল, তার ছেলে আলী আকবর আসামি করা হয়। তখন আকবরকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।