এমনকি নগর ছাত্রলীগের
সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ জানিয়েছে প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ারা।
বুধবার একজন আহ্বায়ক,
ছয়জন যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ৩৪ জনকে সদস্য করে মোট ৪১ জনের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন নগর
ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু এবং সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
এতে আহ্বায়ক করা হয়
কাজী নাঈমকে। যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় মিজানুর রহমান, আনোয়ার পলাশ, জয়জিৎ চৌধুরী, মায়মুন
উদ্দিন মামুন, রবিউল হোসেন কমল ও বোরহান উদ্দিন ইমনকে।
কমিটি ঘোষণার পরপরই
বুধবার রাতে মহসীন কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন কলেজ ছাত্রলীগের একটি পক্ষের
বেশকিছু নেতাকর্মী।

তারা কলেজের সামনের
সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন। সেখানে টায়ারে আগুন দেওয়া হয়। নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান
আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের ছবিতে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা
হয়। এরপর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে
কলেজ ক্যাম্পাসে আবারও বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় আহ্বায়ককে অবাঞ্চিত
ঘোষণা করা হয়।
কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি
এবং বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে নতুন ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পলাশ বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কেউ আহ্বায়ককে মেনে নেয়নি।
আমরা তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি। সে একজন মোবাইল চোর, ইভটিজার, মাদকাসক্ত এবং শিবিরের
সাথী ছিল।
“এসব বিষয়ে পত্রিকায়
নিউজও হয়েছিল। নগর ছাত্রলীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। তাদের কমিটি ভেঙে যাবে। তাই তারা
জেনেশুনেই এ কাজ করেছে। মহসীন কলেজে ছাত্রলীগ শুরু করেছি আমরাই। অথচ যারা শিবির বিরোধী
কোনো আন্দোলন সংগ্রামে ছিল না তাদের দিয়ে তারা (নগর ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ) কমিটি করেছে।”
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক
মায়মুন উদ্দিন মামুন বলেন, “মহসীন কলেজে শিবির বিতাড়ন এবং এরপর থেকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক
সকল কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করেছি। অথচ শুধুমাত্র ‘নিজের লোক’ বলে এরকম বিতর্কিত একজনকে
আহ্বায়ক করে কমিটি দেয়া হয়েছে।”

নতুন কমিটির আরেক যুগ্ম
আহ্বায়ক বোরহান উদ্দিন বলেন, “২০১৫ সাল থেকে ক্যাম্পাসে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত আমরা। যারা
অনেকে মামলা, নির্যাতনের শিকার তাদের মূল্যায়ন না করে এমন লোকজনকে নিয়ে কমিটি করা হয়েছে
যারা ক্যাম্পাসে ছিল না। চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপবাদ আছে কারো কারো বিরুদ্ধে।
আমাদেরও যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি।
“আহ্বায়ক ২০১৭ সালে
ক্যাম্পাসে শিবিরকর্মীদের সমর্থন দিয়েছিল। তাকে ২০১৬ সালে মোবাইল চুরির ঘটনায় গণপিটুনি
দেওয়া হয়। সে বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। বয়স ৩১ এর উপরে। বয়স চলে
যাওয়ার পরও আহ্বায়ক করা হয়েছে।”
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে
আহ্বায়ক কাজী নাঈম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কলেজের রাজনীতিতে শুরু থেকে
যারা কষ্ট করেছে তাদের সবাইকে স্থান দেওয়া হয়েছে। খুব সুন্দর কমিটি হয়েছে। সবাইকে তো
চাইলেই আর সব পদ দেওয়া সম্ভব নয়।
“আমি গ্রুপিং এর কারণে
মারধরের শিকার হই। সেই ছবি তুলে তারা মোবাইল চুরির কথা লিখে প্রচার করেছিল। যেসব অভিযোগ
করা হচ্ছে তার একটিও সত্য হলে শুধু কমিটি না রাজনীতিও ছেড়ে দিব। আমি মুক্তিযোদ্ধার
সন্তান। সব খোঁজ নিয়েই আমাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।”
কমিটির বিষয়ে জানতে
নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু এবং সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সাথে
বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।