মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয়
দিনে দ্বিতীয় সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে অলআউট ৪০৯ রানে।
প্রথম দিন শেষে ওয়েস্টে
ইন্ডিজের এনক্রুমা বনার বলেছিলেন, ৩৫০ রানের বেশি যে কোনো স্কোরই তাদের জন্য দারুণ।
চারশ পেরিয়ে তাই খুশিই থাকার কথা তাদের। তবে দলীয় স্কোরের প্রাপ্তিতেও মিশে থাকছে তাদের
তিন ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ। বনার নিজে ফেরেন ৯০ রানে। কিপার-ব্যাটসম্যান
জশুয়া দা সিলভার বিদায় ৯২ রানে, পেসার আলজারি জোসেফ ৮২।
প্রথম দিনে দুটি
করে উইকেট শিকারি আবু জায়েদ চৌধুরি ও তাইজুল ইসলাম ভাগাভাগি করে নেন শেষ চার উইকেট।
মিরপুরে সবশেষ টেস্টেও আবু জায়েদ নিয়েছিলেন ৪ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ
৪ উইকেট হারায় ২৫ রানে, ৩৪ বলের মধ্যে।
শেষের এই স্বস্তির
আগে বাংলাদেশের সময়টা ছিল ভীষণ হতাশার। প্রথম সেশনেই একশর বেশি রান তুলে ফেলে ক্যারিবিয়ানরা।
পরের সেশনেও নিয়ন্ত্রণ ছিল তাদেরই।
দিনের প্রথম ওভার
থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের এলোমেলো বোলিং। প্রথম দিনের সফলতম বোলার আবু জায়েদের হাত
ধরে শুরু হয় নতুন দিন। কিন্তু তিনিই ছিলেন সবচেয়ে বিবর্ণ।
তার শক্তির জায়গা
সুইং। অথচ একের পর এক লেংথ ও শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি করে যান। ফুল লেংথ কয়েকটি করেন
লেগ স্টাম্পে। তাতে বনার ও জশুয়া আরামেই বাড়ান রান।
আরেকপাশে তাইজুলও
রাখতে পারেননি তেমন কোনো প্রভাব। দিনের প্রথম ৮ ওভারে ছিল না কোনো মেডেন। পরে নাঈম
হাসানও ধরে রাখেন আলগা বোলিংয়ের ধারা। প্রথম ঘণ্টায় রান আসে ওভারপ্রতি প্রায় চার করে।

৯২ রানে আউট হয়ে ফিরছেন হতাশ জশুয়া দা সিলভা।
৮৮ রানের এই জুটি
ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আগের ম্যাচে ৮৬ রানের বিদায়ের পর এবারও কাছে গিয়ে সেঞ্চুরি
পাননি বনার। তার ডিফেন্স থেকে আসা বল লেগ স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন মোহাম্মদ মিঠুন। ২০৯
বলে ৯০ রানে থামে বনারের অভিযান।
মিরাজের পরের ওভারেই
জশুয়া ফিফটি স্পর্শ করেন তার দ্বিতীয় টেস্ট ফিফটি, ৮৬ বলে। এরপরও তিনি এগিয়ে যান দারুণ
ব্যাটিংয়ে।
রাকিম কর্নওয়ালের
আগে ব্যাটিংয়ে নামার সুযোগ পেয়ে জোসেফ দেখিয়ে দেন নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য। দুর্দান্ত
সব শটে রান বাড়ান দ্রুত। পেস-স্পিন, সবই সামলান কোনো অস্বস্তি ছাড়াই। মিরাজকে ছক্কায়
ওড়ান লং অন ও মিড উইকেট দিয়ে, নাঈমকে মিড উইকেট দিয়ে, তাইজুলকে লং অন দিয়ে, আবু জায়েদকে
পুল শটে মিড উইকেট দিয়ে।
এই দুজনের জুটিতেই
চারশ ছোঁয়ার পথে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জশুয়া ছিলেন শতরানের পথে। তাকে থামিয়েই জুটি ভাঙেন
তাইজুল। ১৮৭ বলে ৯২ করে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড জশুয়া।
জোসেফ খেলছিলেন স্পেশালিস্ট
ব্যাটসম্যানের মতোই। সঙ্গীকে হারানোর পর তিনিও আর বেশি দূর যেতে পারেননি। আউট হয়ে যান
৮২ রানে। গত ডিসেম্বরেই হ্যামিল্টনে তিনি ফিরেছিলেন ৮৬ রানে।
পরের দুই উইকেটের
জন্য আর বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। তবে এমন শেষের পরও প্রথম ইনিংসের রানে
সন্তুষ্টই থাকার কথা ক্যারিবিয়ানদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২২৩/৫) ১৪২.২ ওভারে ৪০৯
(বনার ৯০, জশুয়া ৯২, জোসেফ ৮২, কর্নওয়াল ৪*,
ওয়ারিক্যান ২, গ্যাব্রিয়েল ৮; আবু জায়েদ ২৮-৬-৯৮-৪, মিরাজ ৩৩-৯-৭৫-১, নাঈম ২৪-৩-৭৪-০,
তাইজুল ৪৬.২-৮-১০৮-৪, সৌম্য ১১-১-৪৮-১)