অবকাঠামো খাতের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বৃহস্পতিবার একদল সেনেটরের সঙ্গে কথা বলার সময় সতর্ক করে তিনি একথা বলেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
এর আগের দিন বুধবার রাতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ফোনে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
বিবিসি জানায়, ওই ফোনালাপে শি মানবাধিকার বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়ে একটি সংঘাত উভয় দেশের জন্য বিপর্যয় বয়ে আনবে বলে সতর্ক করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশ ও গণপূর্ত কমিটির সঙ্গে বৈঠককালে বাইডেন সেনেটরদের বলেন, “যদি আমরা চলতে শুরু না করি তারা (চীন) আমাদের মধ্যাহ্নভোজ খেয়ে ফেলবে।
“তারা পরিবহন, পরিবেশ এবং অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত সবগুলো ইস্যু নিয়ে কাজ করছে এবং শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে। আমাদের শুধু পদক্ষেপ নিতে হবে।”
নির্বাচনী প্রচারণাকালে তার ক্ষমতার চার বছরের মেয়াদে কর্ম সংস্থান করতে ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি (ক্লিন এনার্জি) অবকাঠামো উন্নয়নে দুই ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়ের প্রস্তাব রেখেছিলেন বাইডেন।
২০১৭ সালে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ার্সের (এএসসিই) একটি বহু উল্লেখিত ‘রিপোর্ট কার্ডে’ অবকাঠামোর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ডি প্লাস’ গ্রেড দেওয়া হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের পুরো ‘অবকাঠামোগত ঘাটতি’ ২০২৫ সালের মধ্যে পূরণ করতে দুই ট্রিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে বলে এএসসিইর হিসাবে বলা হয়েছিল। এটি করা না হলে ওই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে এর দ্বিগুণ মূল্য চুকাতে হবে বলে ওই প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছিল।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ২০১৯ সালের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতার প্রতিবেদনে বিস্তৃত পরিসরে অবকাঠামোগত মানদণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ১৩তম বলে জানানো হয়েছিল। অবকাঠামোগত মনাদণ্ডে ২০০২ সালে দেশটি পঞ্চম অবস্থানে ছিল।
অপরদিকে বাইডেন যাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী’ বলে অভহিত করেছেন সেই চীন নিজেদের অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। হাই-স্পিড রেল, মেট্রো সিস্টেম, অ্যাপার্টমন্টে ভবন, বৈদুতিক গ্রিড ও মোবাইল নেটওয়ার্কে দেশটি বিপুল অর্থ নিয়োগ করেছে।
বাইডেন বলেছেন, “রেলপথে তাদের বড় বড় নতুন উদ্যোগ রয়েছে আর ইতোমধ্যে তাদের এমন ট্রেন আছে যেগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে ঘণ্টায় ২২৫ মাইল যায়।”
চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দুই ঘণ্টার ফোনালাপে আরও বেশি কিছু বিষয়ে তার বিরোধ হয়েছে, সেগুলো নিয়েও সেনেটরদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বেইজিংয়ের ‘জরদস্তিমূলক ও অন্যায়’ বাণিজ্য প্রক্রিয়ার পাশাপাশি হংকংয়ে নেওয়া দেশটির দমননীতি ও শিনজিয়াংয়ে মুসলিমদের ক্ষেত্রে নেওয়া পদক্ষেপের বিষয়েও বাইডেন ‘অপরিহার্য’ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাইওয়ানের বিষয়ে চীনের ক্রমবর্ধমান আক্রমণাত্মক ভঙ্গী এবং কোভিড-১৯ নিয়ে দেশটির স্বচ্ছতার অভাব নিয়েও বাইডেন কথা তুলেছিলেন বলে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি জানিয়েছেন।
হংকং, শিনজিয়াং ও তাইওয়ানের বিষয়ে শি শক্ত অবস্থান নিয়ে এগুলো তাদের ‘সার্বভৌম ও অঞ্চলগত অখণ্ডতার’ বিষয় বলে উল্লেখ করেছেন।
সংঘাত ‘বিপর্যয়কর’ হতে পারে এবং উভয়পক্ষের ভুল বোঝাবুঝির এড়ানোর উপায়গুলো পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা উচিত বলে বাইডেনকে বলেছেন শি, জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।