বিশ্বখ্যাত চিকিৎসা
সাময়িকী ল্যানসেটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তারা এই সতর্কবর্তা দিয়েছেন বলে শনিবার বিবিসির
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
নিবন্ধে বলা হয়েছে,
এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ডোজ টিকা দরকার হলেও দরিদ্র দেশগুলোর তহবিলের ঘাটতি
রয়েছে এবং ধনী দেশগুলো বেশিরভাগ টিকার যোগান নিয়ে যাচ্ছে।
টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি
এবং দাম সহনশীল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কথিত ‘টিকা জাতীয়তাবাদ’
যে বিশ্বে বহু মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে, সে বিষয়ে এটাই সর্বশেষ সতর্কবার্তা বলে
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত বছর বিভিন্ন দেশ
যখন পাল্লা দিয়ে নিজেদের জনগণের জন্য টিকার ব্যবস্থা করতে চুক্তি করছিল, সে সময় জাতিসংঘের
সাধারণ অধিবেশনে সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস একে ‘অন্যায্য’ ও ‘নিজেদের পরাজয়’
হিসেবে বর্ণনা করেন।
“সবাই নিরাপদ না হওয়া
পর্যন্ত আমাদের কেউই নিরাপদ নই,” বলেছিলেন তিনি।
ল্যানসেটে প্রকাশিত
নিবন্ধে বলা হয়, টিকার সহজলভ্যতার ঘাটতি করোনাভাইরাসের আরও ‘মিউটেশনের’ ঝুঁকি বাড়িয়ে
দেবে। আর তাতে সংকট আরও দীর্ঘায়িত হবে।
এই নিবন্ধ লেখায় নেতৃত্ব
দেওয়া লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিকসের পাবলিক হেলথের অধ্যাপক অলিভিয়ে ভোটারস বলেন, “টিকা
আরও সমতার সঙ্গে বিতরণ করা না গেলে বৈশ্বিক পর্যায়ে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক
বছর লেগে যেতে পারে।”
কোভিড-১৯: টিকার দৌড়ে কোন দেশ কোথায়
‘৭০% ডোজই’ ধনী দেশগুলোর দখলে
এক বছরেরও কম সময়ের
মধ্যে বেশ কয়েকটি টিকা তৈরি হওয়াকে ‘অসাধারণ অর্জন’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে নিবন্ধে।
তবে টিকার দামের তারতম্যের
কথা তুলে ধরে সেখানে বলা হয়েছে, সবচেয়ে কম দাম পড়ছে ৫ ডলারের মতো, আর সবচেয়ে ব্যয়বহুলটা
হচ্ছে ৬০ ডলারের বেশি। কোনো কোনোটি ঘরের তাপমাত্রায় রাখা যায়, আবার অন্যগুলো কম তাপমাত্রায়
রাখতে বিশেষ যন্ত্রের দরকার হয়।
টিকাদান কার্যক্রমে
কাদের নিয়োজিত করা হচ্ছে, তাও একটি চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থার কিছু সদস্যের কখনোই প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাদান কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত
না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেছেন তারা।
ধনী দেশগুলো আনুমানিক
৭০ শতাংশ টিকাই নিয়ে নিচ্ছে বলে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের দেশগুলো আগামী বছরগুলোতে টিকার
সংকটে পড়তে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে নিবন্ধে।
“বৈশ্বিকভাবে টিকার
মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়ার জন্য
এ যাবৎকালের যে কোনো টিকার চেয়ে বিশ্বের এখন বেশি সংখ্যায় কোভিড-১৯ টিকা দরকার,” বলা
হয়েছে সেখানে।
নতুন নতুন টিকা অনুমোদন
পাওয়ায় সেগুলো এলাকাভেদে প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
উদাহরণ হিসেবে তারা বলছেন, যে সব টিকার একটি ডোজ দিলেই হয়ে যায় সেগুলো দরিদ্র দেশগুলোতে
দেওয়া যেতে পারে। তাতে টিকা সংরক্ষণের জন্য কোল্ড-সাপ্লাই চেইন এবং দুই ডোজের জন্য
প্রয়োজনীয় নিবন্ধনের দরকার হবে না।