বুধবার ভোররাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-পটুয়াখালী সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। গভীর রাতে ছাত্রদের বেসরকারি ছাত্রবাসে (মেস) হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভে নামে তারা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকুল আরেফিন জানান, ছাত্রদের উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, শিক্ষার্থীদের আবাসন নিরাপাত্তা নিশ্চিত করাসহ তাদের তিন দফা দাবি ছিল। তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাসে তারা ঘরে ফিরে গেছেন।
রাতের আঁধারে ছাত্রদের উপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন উপাচার্য।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিভাগের ছাত্র মাহমুদ হাসান তমাল জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে টিকিট কাটার জন্য রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বিআরটিসি কাউন্টারে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সজল ও ফারজানা। সেখানে কাউন্টার কর্মচারী রফিকের সাথে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়।
এক পর্যায়ে রফিক সজলকে ছুরিকাঘাত করে এবং ফারজানাকে লাঞ্ছিত করা হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রূপাতলীতে সড়ক অবরোধ করে। পরে পুলিশ রফিককে গ্রেপ্তার করলে সড়ক ছেড়ে দেন তারা।
তমালের অভিযোগ করেন, এ ঘটনার জেরে পরিবহন শ্রমিকরা মঙ্গলবার গভীর রাতে রূপাতলী হাজিংয়ের সি-ব্লকের হারুন ম্যানশন ভবনে ছাত্রদের মেসে হামলা চালায়। হামলায় নেতৃত্ব দেয় বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন।
হামলায় ১৩ ছাত্র আহত হয়েছে। যাদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেন তিনি।
এর প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবার সড়ক অবরোধ করে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুজয় শুভ।
তিনি জানান, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসে বিকাল ৫টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তারা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার মোক্তার হোসেন বলেন, “আমরা আশ্বাস দিয়েছি দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এর প্রেক্ষিতে ছাত্র-ছাত্রীরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছে। বিকেল থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।”
তিনি জানান, ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার তাদেরকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের সাথে ঝামেলা হয়েছে বিআরটিসির স্টাফদের সাথে। বিআরটিসি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এখানে মিনিবাস মালিক, শ্রমিকদের কোনো বিষয় নেই। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।‘