বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ডিইউজের নির্বাহী পরিষদের সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, “বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরসহ গণমাধ্যমের ওপর অনৈতিক চাপ প্রয়োগ উদ্বেগজনক।”
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ওই চাপের বিষয়গুলো সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রিমিয়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এইচ বি এম ইকবালের বিরুদ্ধে গত দেড় দশকে বিভিন্ন সময়ে যেসব মামলা হয়েছে, তার কার্যক্রম আর আদালতের আদেশ নিয়ে অন্য সব সংবাদমাধ্যমের মত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
সেসব মামলা থেকে তারা অব্যাহতিও পেয়েছেন। এখন, এতদিন পর, সেসব পুরনো খবর মুছে ফেলতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে অদ্ভুত কায়দায় চাপ দেওয়া হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইতোমধ্যে তিন ডজনের বেশি উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জ্যেষ্ঠ চার সম্পাদকের নামে। সেখানে বলা হচ্ছে, ওইসব প্রতিবেদন ‘ডিলিট’ না করলে মামলা করা হবে। মামলা হবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আর মানহানির অভিযোগে। সব নোটিস মেলালে ক্ষতিপূরণ দাবির অংক দাঁড়ায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ডা. এইচ বি এম ইকবাল নিজে কোনো নোটিস পাঠাননি। বিভিন্ন জেলা থেকে যারা নোটিস পাঠাচ্ছেন, তারা নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন ডা. ইকবালের বন্ধু, শুভাকাঙ্খী হিসেবে।
এর মধ্যে অন্তত একটি নোটিসে ‘বিরূপ পরিণতির’ জন্য প্রস্তুত থাকার ‘হুমকিও’ দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপের বিষয়ে জানাতে বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সংবাদ সম্মেলনে প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।
তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “ভুল হলে আমরা স্বীকার করব, সংশোধন করার প্রয়োজন হলে সংশোধন করে দেব, কিন্তু চাপের কাছে নতি স্বীকার করে আমরা কোনো খবর তুলে নেব না।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব কোনো অনুসন্ধান এসব প্রতিবেদনে নেই; সম্পূর্ণভাবে মামলার কার্যক্রম ও আদালতের আদেশই সেখানে বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাহলে কোন যুক্তিতে একটি সংবাদমাধ্যম এসব প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলবে?”
মামলা হওয়ার বহু বছর পর তাতে খালাস পেয়ে কেউ যদি ওই মামলার পুরনো সব প্রতিবেদন সরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলেন, বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াইয়ের অবতারণা করেন, তাহলে তার প্রভাব যে প্রতিটি গণমমাধ্যমের ওপর পড়বে, সে বিষয়েও সতর্ক করা হয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সংবাদ সম্মেলনে।
চাপে নত হব না: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান সম্পাদক
সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের চেষ্টা: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের বিবৃতি
বৃহস্পতিবার ডিইউজের নির্বাহী পরিষদের সভার শুরুতে প্রয়াত সাংবাদিক জহর লাল চন্দ্র দাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন ও তার কর্মময় জীবনের ওপর আলোচনা করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ দেশের সব গণমাধ্যমে নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের দাবি জানান এবং নিয়োগপত্র ছাড়া সাংবাদিক নিয়োগের ‘অপতৎপরতার’ নিন্দা জানান।
সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, করোনাভাইরাসের ‘অজুহাত’ দেখিয়ে গণমাধ্যমে বেতন হ্রাস, ছাঁটাই ও বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার ‘পাঁয়তারা’ চলছে। বকেয়া বেতন-ভাতা আদায়ে সাংবাদিক সমাজকে ঐক্যেবদ্ধ হতে হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ডিইউজে নেতৃবৃন্দ মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের চাকরি সুরক্ষাসহ গণমাধ্যম শিল্প রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। অবিলম্বে, সরকারের নেতৃত্বে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান ডিইউজে নেতারা “
সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ জিহাদুর রহমান জিহাদ, প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক দুলাল খান, জনকল্যাণ সম্পাদক সোহেলী চৌধুরী, দফতর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী, নির্বাহী পরিষদ সদস্য সুরাইয়া অনু, জিএম মাসুদ ঢালী, ইব্রাহীম খলিল খোকন, শাহনাজ পারভীন এলিস, রাজু হামিদ, সলিমুল্লাহ সেলিম, অজিত কুমার মহলদার, জুবায়ের রহমান চৌধুরী, নিউ নেশন ইউনিট চিফ হেমায়েত হোসেন, জনতার ইউনিট চিফ আতাউর রহমান জুয়েল, জনকণ্ঠের ইউনিট চিফ রাজন ভট্টাচার্য্য, আরটিভির ইউনিট চিফ সাইখুল ইসলাম উজ্জ্বল সভায় উপস্থিত ছিলেন।