ক্যাটাগরি

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে ‘অনৈতিক’ চাপ প্রয়োগের প্রতিবাদ শাবি প্রেস ক্লাবের

প্রেস ক্লাবের সভাপতি জুবায়ের মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আল রাজী বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ ‘ন্যক্কারজনক’ ঘটনার নিন্দা জানান।

তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, “গণমাধ্যম যখন একটি দেশের দর্পণ স্বরূপ কাজ করে দেশের সংকট-সম্ভাবনা ও গণমানুষের কথা তুলে ধরে সমাজ বিনির্মাণে অনন্য ভূমিকা রাখে, তখন এই গণমাধ্যমই তথাকথিত স্বার্থান্বেষী মহলের অনৈতিক চাপ, মামলার হুমকি কিংবা হয়রানির শিকার হচ্ছে; যা স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিরাট অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

“সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, হেড অব ইংলিশ নিউজ অরুণ দেবনাথ, বার্তা সম্পাদক জাহিদুল কবির এবং বার্তা সম্পাদক মুনীরুল ইসলামকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আর্কাইভ থেকে প্রকাশিত পুরনো কিছু প্রতিবেদন মুছে ফেলার জন্য অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করছে একটি প্রভাবশালী মহল। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে উকিল নোটিস পাঠিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ওই চাপের বিষয়গুলো সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রিমিয়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এইচ বি এম ইকবালের বিরুদ্ধে গত দেড় দশকে বিভিন্ন সময়ে যেসব মামলা হয়েছে, তার কার্যক্রম আর আদালতের আদেশ নিয়ে অন্য সব সংবাদমাধ্যমের মত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সেসব মামলা থেকে তারা অব্যাহতিও পেয়েছেন। এখন, এতদিন পর, সেসব পুরনো খবর মুছে ফেলতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে অদ্ভুত কায়দায় চাপ দেওয়া হচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইতোমধ্যে তিন ডজনের বেশি উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জ্যেষ্ঠ চার সম্পাদকের নামে। সেখানে বলা হচ্ছে, ওই সব প্রতিবেদন ‘ডিলিট’ না করলে মামলা করা হবে। মামলা হবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আর মানহানির অভিযোগে। সব নোটিস মেলালে ক্ষতিপূরণ দাবির অংক দাঁড়ায় ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার প্রত্যয় জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব কোনো অনুসন্ধান এসব প্রতিবেদনে নেই; সম্পূর্ণভাবে মামলার কার্যক্রম ও আদালতের আদেশই সেখানে বস্তুনিষ্ঠভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাহলে কোন যুক্তিতে একটি সংবাদমাধ্যম এসব প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলবে?

“আমাদের বার বার বলা হয়েছে, অন্যরাও নাকি এ বিষয়ে তাদের প্রতিবেদন সরিয়ে ফেলেছে। বিভিন্নভাবে তদবির করানো হয়েছে প্রভাবশালীদের দিয়ে, যাদের মধ্যে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিও আছেন। বলা হয়েছে, তারা সরিয়ে ফেলেছেন, আমরা কেন তা করছি না। দীর্ঘদিন নানাভাবে চেষ্টার পরও প্রতিবেদন সরাতে রাজি করাতে না পেরে এখন তারা চাপ দেওয়ার অদ্ভুত এক কৌশল নিয়েছেন।”

এভাবে চাপ প্রয়োগকে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বাধা হিসেবে বর্ণনা করে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের নেতারা বিবৃতিতে বলেন, “আমরা স্পষ্টতই দেখতে পাচ্ছি যে, সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও হয়রানির উদ্দেশ্যে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সম্পাদকসহ শীর্ষস্থানীয় চারজনকে মামলার হুমকি ও অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করার একটি কৌশল হিসেবে মনে করা হচ্ছে।”

স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে প্রভাবশালী মহলের অন্যায় চাপ সৃষ্টি ও প্রতিবন্ধকতা রুখতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।