ক্যাটাগরি

কাদের মির্জার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় আ.লীগ নেতারা

নোয়াখালী আওয়মী লীগ কার্যালয়ে শুক্রবার সকালে এই সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা ছিলেন। তারা কাদের মির্জার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন নোয়াখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু।

তিনি বলেন, “আবদুল কাদের মির্জা একেক সময় একেক রকমের বিবৃতি দিচ্ছেন। টেন্ডারবাজি, চাকরিতে নিয়োগবাণিজ্য সম্পর্কে কাদের মির্জা যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, আমরা তা চ্যালেঞ্জ করছি।

“কাদের মির্জা মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পাওযার আগে কখনও আওয়ামী লীগ বা দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কিছুই বলেননি। দলের মনোনীত প্রার্থী হওয়ার পর থেকে তিনি আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা ওবায়দুল কাদেরসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপিসহ নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী, ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী, একরামুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী-সন্তানের ওপর (কাদের মির্জা) কেন এতটা বিরাগভাজন হলেন আমরা তা বুঝে উঠতে পারছি না।”

পিন্টু বলেন, “কাদের মির্জা বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের মত আচরণ করছেন। আমাদের মনে হচ্ছে, জেলার সার্বিক উন্নয়নমূলক কাজের পর্যালোচনায় কাদের মির্জার মনে প্রতিহিংসার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি যেন প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কাণ্ডারি।

“সাম্প্রতিক সময়ে কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন, যা দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের তফশিল ঘোষণার আগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড, জেলা আওয়ামী লীগ ও তৃণমল পর্যায়ের নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে (মির্জা) নিজেই উপজেলার আটটি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম কোন ক্ষমতাবলে ঘোষণা করেন? অপরাজনীতির সংজ্ঞা কী? কমিটি ভাঙছেন, গড়ছেন। উনি কি অপরাজনীতি করছেন না? আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।”

পিন্টু বলেন, “কাদের মির্জা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মত সচিবসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগর করে আসছেন। তার ক্ষমতার দম্ভে অনেক প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে নাজেহাল হতে হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানাই, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী কাদের মির্জার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমরা কাদের মির্জার এসব সংগঠনবিরোধী অসদাচরণের জন্য শাস্তি দাবি করছি।”

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান নাছের, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ইমন ভট্ট, যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আরমানও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদেরের ছোট ভাই আব্দুল কাদের মির্জা গত মাসে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে নানা অভিযোগ তুলে আলোচনার জন্ম দেন। সে সময় তিনি নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভায় মেয়র পদে পুনর্নির্বাচিত হন।

পরে তিনি সেতুমন্ত্রী কাদেরের বিরুদ্ধে কটূক্তির অভিযোগ তুলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় হরতাল ডেকে প্রত্যাহার করেন।

বৃহস্পতিবার তিনি জেলার ডিসি-এসপিকে প্রত্যাহারের দাবিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আধাবেলা হরতাল ডেকে তা বাস্তবায়ন করেন।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার সকাল ৯ট থেকে ১১টা পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন কাদের মির্জা। এ সময় তিনি ‘নোয়াখালীর অপরাজনীতি বন্ধ, ডিসি, এসপি ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি, পুলিশ পরিদর্শকে (তদন্ত) প্রত্যাহার এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে’ শনিবার সকাল ১০টা থেকে কর্মী-সমর্থকদের লাঠিসোটা নিয়ে পুনরায় থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেন তিনি।