সৌরজগতে পৃথিবীর নিকট প্রতিবেশী এই লাল গ্রহে কখনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা, সেই তথ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে এই রোবট।
বলা হচ্ছে, পারসিভের্যান্স হল মহাকাশে পাঠানো মানুষের বানানো সর্বাধুনিক অ্যাস্ট্রোবায়োলজি ল্যাব।
বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে মঙ্গলের বিষুবরেখার কাছাকাছি বিশাল এক গহ্বরে নামে নাসার মার্স রোভার। ওই গহ্বর বা ক্রেইটারের নাম দেওয়া হয়েছে জেজেরো।
পৃথিবী থেকে মানুষ অবশ্য পারসিভের্যান্সের সফল অবতরণের বিষয়টি জানতে পেরেছে প্রায় ১১ মিনিট পর। মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে সংকেত পৌঁছাতে ওই সময়টা লেগেছে।
রোবট যানটি যে মঙ্গলের মাটিতে নিরাপদে নেমেছে, তা নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার মিশন কন্ট্রোল রুম।
জেজেরো থেকে পারসিভের্যান্সের তোলা প্রথম একটি ছবিও অল্প সময়ের মধ্যেই প্রকাশ করে নাসা।
পারসিভের্যান্স মঙ্গনে নামার পর নাসার মিশন কন্ট্রোল রুমে উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স
এই মঙ্গল অভিযানে নাসার ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ম্যাট ওয়ালেস বলেন, তাদের মঙ্গলযান খুব ভালো অবস্থায় আছে, এটা দারুণ খবর।
বিবিসি লিখেছে, ছয় চাকার ওই মার্স রোভার অন্তত দুই বছর সেখানে কাটাবে। পাথর খুঁড়ে নমুনা ও তথ্য সংগ্রহ করবে। জানার চেষ্টা করবে, সেখানে কখনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা।
“অবতরণ নিশ্চিত হয়েছে। পারসিভের্যান্স মঙ্গলপৃষ্ঠে নিরাপদে নেমেছে,” নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেন নাসার এই অভিযানের লিড গাইডেন্স অ্যান্ড অপারেশন্স স্পেশালিস্ট স্বাতী মোহন।
রোবোটিক এ যানটিকে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে ঢোকার আগে প্রায় ৭ মাসে ৪ হাজার ৭২০ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়েছে; এরপর ঘণ্টায় ১৯ হাজার কিলোমিটার গতিতে বায়ুমণ্ডল পেরিয়ে এটি লাল গ্রহের পৃষ্ঠ স্পর্শ করে।
অবতরণের পরপরই পারসিভের্যান্স মঙ্গল পৃষ্ঠ থেকে বেশ কয়েকটি সাদাকালো ছবি পাঠায়; যার মধ্যে একটিতে পাথুরে পৃষ্ঠের ওপর রোভারটির ছায়াও দেখা গেছে।
পারসিভের্যান্সের নিরাপদ অবতরণকে ‘অসাধারণ অর্জন’ অভিহিত করেছেন নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্টিভ জারসিক। ওয়ালেস জানিয়েছেন, তাদের রোবোটিক যানটির মঙ্গলের অবতরণ ছিল ‘নিখুঁত’।
নাসার এ মঙ্গল যানটির অবতরণই ছিল দুই বছরের, ২৭০ কোটি ডলার ব্যায়ের প্রজেক্টের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ।
পারসিভের্যান্স ছাড়াও আগামী এক দশকের মধ্যে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার সহযোগিতায় মঙ্গলে আরও দুটি অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা আছে নাসার।
কোভিড-১৯ মহামারীতে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভয়াবহ বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বৃহস্পতিবার পারসিভের্যান্সের অবতরণ বিরাট খুশির খবর নিয়ে হাজির হয়েছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে নাসার মঙ্গলযানের অবতরণ পর্যবেক্ষণ করেছেন; পরে টুইটারে তিনি অভিযান সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানান।
Congratulations to NASA and everyone whose hard work made Perseverance’s historic landing possible. Today proved once again that with the power of science and American ingenuity, nothing is beyond the realm of possibility. pic.twitter.com/NzSxW6nw4k
— President Biden (@POTUS) February 18, 2021