ক্যাটাগরি

কাদের মির্জা ও বাদলের ফের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

আগামী সোমবার সকালে বসুরহাটে আবদুল কাদের মির্জা মানববন্ধন কর্মসূচির এবং মিজানুর রহমান বাদল বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার বেলা ১১টায় বসুরহাট রূপালী চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং দুপুর সাড়ে ১২টায় কোম্পানীগঞ্জের পেশকার হাটে এক সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান বাদল এসব কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, “এটা আওয়ামী লীগের ডাকে না, এটা হল আবদুল কাদের মির্জার ডাকে।”

সব দলের নেতাকর্মীসহ সব ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজস্ব  ব্যানার নিয়ে তার মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

গত শুক্রবার বিকেলে প্রশাসনের সহযোগিতায় মিজানুর রহমান বাদলের লোকজন সশস্ত্র হামলা চালিয়ে তার অর্ধ শতাধিক কর্মী-সমর্থককে আহত করেছে অভিযোগ করেন তিনি। এই

হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বসুরহাটে সোমবারের মানববন্ধনে ডাক দিয়েছেন বলেন কাদের মির্জা।

অপরদিকে, পেশকার হাটের সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান বাদল অভিযোগ করেন, আবদুল কাদের মির্জা গত দুই মাস থেকে কোম্পানীগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছে।

গত শুক্রবার মির্জার লোকজন তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক কর্মী সমর্থককে আহত করেছে।

বাদল বলেন, “সত্যবচন নামধারী এই কাদের মির্জা প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে আসছেন। তিনি নিজে অপরাজনীতির আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা, অনিয়মতান্ত্রিক অগণতান্ত্রিকভাবে কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি।

“ঠিক একইভাবে কোম্পানীগঞ্জের সকল দপ্তরে টেন্ডারবাজি করে বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক হয়েছেন। কোম্পানীগঞ্জের এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে তার চাঁদাবাজিতে হাত পড়েনি। তার সন্ত্রাসের শিকার হয়ে অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে এবং ছাড়তে হয়েছে ঘরবাড়ি।”

আবদুল কাদের মির্জা শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের সম্পর্কে একের পর এক কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে নেতাকর্মীদের অনুভূতিতে আঘাত করেছেন অভিযোগ তুলে এরজন্য সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বাদল।

শনিবারের শিথিল হরতালে পুলিশের কঠোর অবস্থান

নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শনিবার কোম্পানীগঞ্জে সকাল-সন্ধ্যার হরতাল ডাকা হলেও তা বেলা ১২টায় শেষ করেন। ডিগ্রি দ্বিতীয়বর্ষের পরীক্ষার কারণে হরতালের সময় কমিয়ে আনার কথা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, সকালে কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে থানার দিকে হামলা করতে আসেন।

“এ সময় থানার সামনে অবস্থাকারী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে কাদের মির্জা অশালীন মন্তব্য ও মারমুখী আচরণ করেন।”

এক পর্যায়ে সমর্থকদের নিয়ে কাদের মির্জা থানার ভেতরে ঢুকেতে চাইলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় কাদের মির্জা থানার সামনে সড়কের ওপর প্রায় আধা ঘণ্টা বসে থাকেন বলেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী হরতালের সমর্থনে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করেন।

মিছিলটি বসুরহাট রূপালী চত্বর থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় থানার সামনে অবস্থানকারী পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় কাদের মির্জার। এক পর্যায়ে কাদের মির্জা মিছিল নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পেছন থেকে পুলিশ ধাওয়া দেয় এবং লাঠিচার্জ করে বলেন তারা।

ছত্রভঙ্গ হয়ে মিছিলকারীরা ছড়িয়ে গেলেও কাদের মির্জা সড়কের ওপর প্রায় আধা ঘণ্টা বসে থাকেন। পরে দলীয় নেতাকর্মী ও পরিবারের লোকজন তাকে সেখান থেকে পৌরসভা কার্যালয়ে নিয়ে যান বলেন তারা।