কাম্প নউয়ে রোববার লা লিগার ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে দুই দলের প্রথম দেখায় ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল বার্সেলোনা।
সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে সবশেষ ৩ ম্যাচের দুটিতে
হারা কাতালান দলটি এবার পয়েন্ট হারাল লা লিগায়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোর প্রথম
লেগে পিএসজির বিপক্ষে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়া দলটির উপরই আস্থা রেখেছিলেন কুমান। তারা
পারলেন না দলকে জয়ে ফেরাতে।
চাভি এর্নান্দেসকে (৫০৫) ছাড়িয়ে বার্সেলোনার হয়ে লা
লিগায় সবচেয়ে বেশির ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়ার দিনে গোল পেলেন মেসি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত
মাঠ ছাড়তে হলো পয়েন্ট হারানোর হতাশায়।
শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবলে কাদিসকে চেপে ধরে বার্সেলোনা।
যথারীতি রক্ষণে নিজেদের গুটিয়ে রেখেছিল সফরকারীরা।
ডি-বক্সের আশেপাশে কাদিসের ৯ খেলোয়াড়ের ভীড়ে শট নেওয়ার
মতো ফাঁকা জায়গা খুঁজে পাচ্ছিল না স্বাগতিকরা। মেসি, জর্দি আলবা, উসমান দেম্বেলেরা
ডি-বক্সের বাইরে থেকে আচমকা শটে গোলের জন্য চেষ্টা চালান।
ষোড়শ মিনিটে আলবার শট একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। দুই
মিনিট পর মেসির শট এক জনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে বাইরে চলে যায়।
২২তম মিনিটে মেসির পাস থেকে দারুণ সুযোগ এসে যায় অঁতোয়ান
গ্রিজমানের সামনে। কিন্তু শট নিতে একটু দেরি করে ফেলেন তিনি। ততক্ষণে ছুটে আসা কাদিসের
এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল থাকেনি লক্ষ্যে।
২৯তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন মেসি। বার্সেলোনা
অধিনায়কের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান কাদিস গোলরক্ষক জেরেমিয়াস লেদেসমা। তিন মিনিট পর আর পারেননি।
ঠাণ্ডা মাথার স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন মেসি।
পেদ্রি ফাউলের শিকার হওয়ায় পেনাল্টি পেয়েছিল বার্সেলোনা।
লা লিগায় টানা ৬ ম্যাচে গোল পেলেন আর্জেন্টাইন তারকা।
সব মিলিয়ে ১৬ গোল করে আসরে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকার চূড়ায় থাকা লুইস সুয়ারেসকে
স্পর্শ করলেন তিনি।
স্পেনের শীর্ষ লিগে এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হওয়া ৪০ দলের
৩৮টির বিপক্ষে গোল পেলেন মেসি। আগের দুই দেখায় তাকে থামিয়ে রাখতে পেরেছিল কাদিস।
লা লিগায় পেনাল্টি থেকে এটি মেসির ৬০তম গোল। প্রতিযোগিতায়
স্পট কিকে তার চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর (৬১)।
৩৯তম মিনিটে ফ্রেংকি ডি ইয়ং ও ৪৪তম মিনিটে পেদ্রি জালে
বল পাঠালেও অফসাইডের জন্য গোল মেলেনি।
৬০তম মিনিটে একটুর জন্য দ্বিগুণ হয়নি ব্যবধান। ডি-বক্সে
নিজে শট না নিয়ে বল বাড়ান মেসি। কিন্তু গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে শট নিতে পারেননি গ্রিজমান।
বেঁচে যায় কাদিস।
তিন মিনিট পর গতি আর পায়ের কারিকুরিতে বল পায়ে ডি-বক্সে
ঢুকে পড়েন দেম্বেলে। কিন্তু শেষ সময়ে তার শট ব্লক করে দেন কাদিসের এক খেলোয়াড়। দুই
মিনিট পর ফরাসি মিডফিল্ডার আবার ঢুকে পড়েন ডি-বক্সে। এবার শটও নেন কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে
পারেননি।
৭৩তম মিনিটে পেদ্রির উঁচু করে বাড়ানো বল প্রতিপক্ষের
এক খেলোয়াড়ের পায়ে লাগার পর পেয়ে যান মেসি। খুব কাছ থেকে ঠিকানা খুঁজে নিতে পারেননি
তিনি। ছয় মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার শট বার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
দুই দলের প্রথম দেখায় ডিফেন্ডারদের দুটি মারাত্মক ভুলের
খেসারত দিতে হয়েছিল বার্সেলোনাকে। এবারও তাই হলো। ৮৮তম মিনিটে অহেতুক ফাউল করে বিপদ
ডেকে আনেন ক্লেমোঁ লংলে। সফল স্পট কিকে সমতা আনেন আলেক্স ফের্নান্দেস।
যোগ করা সময়ে দারুণ সুযোগ এসেছিল জেরার্দ পিকের সামনে। লা লিগায়
চারশতম ম্যাচের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে নায়ক হতে পারতেন এই ডিফেন্ডার। কিন্তু দারুণ দক্ষতায়
তার শট ব্যর্থ করে দেন কাদিসের আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।
লিগে টানা
সাত জয়ের পর পয়েন্ট হারাল বার্সেলোনা। ২৩ ম্যাচে ১৪ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে
কুমানের দল। সমান
ম্যাচে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৫২ পয়েন্ট নিয়ে
দুই নম্বরে রিয়াল মাদ্রিদ।