ঢাকা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে মেডিকেল
পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন।
২৫ বছর বয়সী মুজাক্কির
দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল বার্তা বাজারের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্বরত
ছিলেন।
তিনি উপজেলার চরফকিরা
ইউনিয়নের নোয়াব আলী মাস্টারের ছেলে। নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে
স্নাতকোত্তর শেষ করে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন মুজ্জাকির।
নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে শুক্রবার বিকালে বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
তার মৃত্যুর খবরে উপজেলার
চাপরাশির হাট বাজার এলাকায় রাতেই প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে এলাকাবাসী। হত্যাকারীদের
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার
বিকালে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষের সময় ভিডিও ধারণ করছিলেন মুজাক্কির। এ সময় সংঘর্ষকারীদের
ছোঁড়া গুলি তার গলা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্ধ হয়। পরে তাকে গুরুতর অবস্থায়
প্রথমে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রাতেই উন্নত
চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার মো.
আলমগীর হোসেন জানান, মুজাক্কিরের মৃত্যুর খবর শুনে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার
চেষ্টা করছেন তারা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা গত মাসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের পৌরসভা
নির্বাচন সামনে রেখে আলোচনায় আসেন। কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভায় মেয়র পদে নৌকা প্রতীকের
প্রার্থী হয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্য দেন তিনি।
ভোটে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়
দফায় মেয়র হওয়ার পরেও আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা করে আসছিলেন তিনি। এরমধ্যে কোম্পানীগঞ্জে
হরতালও পালন করেছেন আবদুল কাদের মির্জা।
বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির
ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে
তার ‘মিথ্যাচারের’ প্রতিবাদে শুক্রবার বিকালে উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে মিছিল
বের করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীরা।
এ সময় আবদুল কাদের
মির্জার অনুসারীরা বাধা দিতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এবং গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এ সময় মুজাক্কিরসহ সাতজন গুলিবিদ্ধ হন, আহত হন আরও অন্তত ২৫ জন।
সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার
সকালে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বাদী হয়ে একটি এবং কোম্পানীগঞ্জ
থানার এসআই সফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। সেখানে চরফকিরা ইউনিয়ন
পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটনকে প্রধান আসামি করে আরও ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করা
হযেছে। এছাড়া অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
একই ঘটনায় আবদুল কাদের
মির্জার পক্ষেও থানায় একটি অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একই সময় পুলিশের ওপর হামলা
ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই সফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে
আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায়ও অজ্ঞাত পরিচয় ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলাগুলোর তদন্ত কাজ
এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।