ক্যাটাগরি

ভাষা আন্দোলন শুরুর উপাখ্যান ‘মুজিব’ অষ্টমে

গোপালগঞ্জ
জেলার টুঙ্গিপাড়ার অতি সাধারণ এক পরিবারে জন্ম
নেওয়া এক কিশোর তার
কৈশোর, যৌবন পেরিয়ে ধীরে ধীরে কীভাবে এই বাংলার ভবিষ্যৎ
দিক নির্ধারক হয়ে উঠলেন– সেই গল্প গ্রাফিক নভেল মুজিবের আগের সাতটি পর্বে দৃশ্যমান হয়েছে। 

এবার
ভাষার মাসে প্রকাশিত অষ্টম পর্বে তুলে আনা হয়েছে ভাষা আন্দোলনের একেবারের গোড়ার কথা।

১৯৪৭
সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র
সৃষ্টির ঘোষণার সময় থেকে ১৯৪৮ সালের মার্চে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঢাকা সফরের সময় পর্যন্ত কয়েক মাসের রাজনৈতিক বর্ণনা এই পর্বে ফুটিয়ে
তোলা হয়েছে লেখায় ও আঁকায়।

দ্বিজাতি
তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে নানা ষড়যন্ত্রের সূচনা হচ্ছিল, এ পর্বে তাও
উঠে এসেছে।

জাতির
জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ নির্ভর এই গ্রাফিক নভেলের
এবারের পর্বে দেখানো হয়েছে, ভাষা আন্দোলনের একেবারে শুরুর দিকে অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করে কেমন করে তিনি জেলায় জেলায় রাষ্ট্রভাষার দাবির পক্ষে জনমত গঠন করেছেন।

অষ্টম
পর্ব শুরু হয়েছে কলকাতায় ট্রপিক্যাল স্কুল অব মেডিসিনে বঙ্গবন্ধুর
চিকিৎসার ঘটনা দিয়ে। এরপর বিএ পরীক্ষা দেওয়া ও পাস করা
এবং দেশভাগের সময়ে সৃষ্ট নানা রাজনৈতিক ও দাঙ্গা পরিস্থিতির
ভেতর দিয়ে কাহিনী এগিয়ে গেছে।

দেশভাগের
ঘোষণা আসার পর নানা প্রতিক্রিয়া
দেখা দিতে শুরু করে তখনকার রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে।   

গ্রাফিক
নভেলে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু বলছেন, “মওলানা আকরম খাঁ সহ বিভিন্ন মুসলিম
লীগ নেতা বাংলা ভাগ করার অযৌক্তিক ফর্মুলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেন।

“বাংলা
ভাগের বিরুদ্ধে আমরাও সভা শুরু করলাম। আমরা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি যে দেশভাগের আলোচনা
শুরু করার বহু আগেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের
নেতারা দেশভাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন।

“বাংলা
যে ভাগ হবে বাংলার নেতারাই তা জানতেন না।”

পাকিস্তান
রাষ্ট্র সৃষ্টির শুরুতেই বাঙালিদের কীভাবে কোনঠাসা করা শুরু হয়, কাহিনীর বর্ণনায় সেসব ঘটনাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। 

“সোহরাওয়ার্দী
সাহেব পশ্চিমবঙ্গের লোক হয়ে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে হলে তাকে আবার নির্বাচন করতে বলা হল। অথচ লিয়াকত আলী খান ভারতবর্ষের লোক হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলেন।

“পাকিস্তানের
জন্মের সাথে সাথেই জন্ম নিল ষড়যন্ত্রের রাজনীতি।”

প্রধানমন্ত্রিত্ব
হারানোর পরও সোহরাওয়ার্দী বসে না থেকে মুসলমানদের
ওপর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে মিলে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য নিরলস কাজ করেছিলেন। সেসব বর্ণনাও এসেছে গ্রাফিক নভেলে।

দেশ
ভাগ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার
মধ্যেই নিজের দেশে ফেরার প্রস্তুতি শুরু হয় মুজিবের। ছোটবেলা
থেকেই যার রাজনৈতিক ছত্রছায়া ও দীক্ষায় বড়
হয়েছেন, সেই হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গ ছেড়ে যাওয়ার বর্ণনা বেদনার অনুভূতি তৈরি করে।

সোহরাওয়ার্দীর
সঙ্গে বিদায় সাক্ষাতের বর্ণনায় মুজিবকে বলতে দেখা যায়, “স্যার, পাকিস্তান চলে যাচ্ছি। ঢাকা থেকে শামসুল হক সাহেব খবর
দিয়েছেন, রাজনৈতিক কর্মীদের সভা হবে।

সোহরাওয়ার্দী
বলেন, “যাও, কী আর করবে,
তোমার বাড়ি তো পূর্ব পাকিস্তানে
পড়েছে।”

মুজিব
বলেন, “আপনি এখানে থেকে আর কী করবেন?
আপনিও দয়া করে পূর্ব পাকিস্তানে চলুন।”

সোহরাওয়ার্দী
বলেন, “যেতেতো হবেই, কিন্তু এখানকার হতভাগা মুসলমানদের জন্য কিছু না করে যাই
কি করে? চারদিকে শুধু দাঙ্গা আর দাঙ্গা। সমস্ত
নেতা চলে গেছে, আমিও চলে গেলে এদের কী উপায় হবে!
তুমি বরং যাও, দেশে গিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যাতে না হয় সে
চেষ্টা করো গিয়ে।”

পূর্ব
পাকিস্তানে ফেরার পর কিছুদিন বাবা,
মা ও স্ত্রীর সঙ্গে
কাটিয়ে ১৯৪৭ এর সেপ্টেম্বরে ঢাকায়
আসেন বঙ্গবন্ধু। ঢাকায় এসে সোজা মোগলটুলি অফিসে।

শামসুল
হক কর্মী সম্মেলন ডেকেছেন। বহু জেলা থেকে কর্মীরা এসেছেন। মূলত তখনকার পূর্ব বাংলার প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের একচ্ছত্র আধিপত্যের বিরুদ্ধে ছিল ওই কর্মী সম্মেলন।
সরকারের পক্ষ থেকে কর্মী সম্মেলন ঠেকানোর চেষ্টা চলে।

নভেলে
মুজিবকে বলতে দেখা যায়, “হক সাহেবের কথার
সত্যতা টের পেলাম খুব শিগগিরই। পাকিস্তান মুসলিম লীগ ভাগ করে ফেলা হলো। পাঞ্জাব ভাগ হয়েছিল, কিন্তু পাঞ্জাবের মুসলিম লীগ ভাগ হলো না। সিন্ধুর না, সীমান্তেরও না।

“একমাত্র
ভাগ হলো বাংলাদেশের মুসলিম লীগ। সোহরাওয়ার্দী সাহেবের সমর্থক ছিল বেশি, তাই খাজা নাজিমুদ্দিনকে ক্ষমতায় আনতে বাংলার মুসলিম লীগকে দুই টুকরা করা হলো।”

সেই
ভাঙনে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ ও পাকিস্তান মুসলিম
লীগ- কোনো ভাগেই ঠাঁই হলো না মুজিব ও
তার সঙ্গীদের।

“আমাদের
একমাত্র দোষ আমরা সোহরাওয়ার্দী সাহেবের সমর্থক আর এসে পড়েছি
খাজা সাহেবের ডেরায়। … কাগজ মারফত নোটিস দিয়ে আমাদের মুসলিম লীগ থেকে বিতাড়িত করা হলো। যে দলের জন্য
আমাদের এত আত্মত্যাগ সেই
দল থেকে কলমের এক খোঁচায় আমাদের
নাম কেটে দেয়া হলো।”      

এর
মধ্যেই জানুয়ারি মাসে ছাত্রলীগ গঠন করা হয়। ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে করাচিতে পাকিস্তান সংবিধান সভার বৈঠকে প্রশ্ন উঠল রাষ্ট্রভাষা কী হবে? কুমিল্লা
থেকে নির্বাচিত বাঙালি গণপরিষদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করার জন্য বিল আনলেন।

খাজা
নাজিমুদ্দিন ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
লিয়াকত আলী এর বিরোধিতা করলেন।
তাদের সঙ্গে বিরোধিতায় নামলেন পার্লামেন্টে বাঙালি সদস্যদের একাংশ। ওই বিলকে পাকিস্তানের
সংস্কৃতিতে ‘হিন্দুয়ানি সংস্কৃতির অনুপ্রবেশের চেষ্টা’ বলেও আখ্যায়িত করা হলো। শেষ পর্যন্ত বিলটি বাতিল করে দেয়া হয়।

সেই
পর্যায়ে গ্রাফিক নভেলে মুজিবকে বলতে দেখা যায়, “আমরা দেখলাম বাংলাকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার বিরাট ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিস
একসাথে প্রতিবাদ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করলাম।”

১১
মার্চকে ‘বাংলা ভাষা দাবি দিবস’ ঘোষণা করে করে ওইদিন ধর্মঘট ডাকা হয়। বিভিন্ন জেলায় ছাত্র সমাবেশ করে ১১ মার্চের আগেই
ঢাকায় ফেরেন বঙ্গবন্ধু। সিংহভাগ ছাত্রই দাবির পক্ষে সমর্থন দিলেন। বহু ছাত্র সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ শুরু করলেন। ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ পোস্টারে পুরো শহর ছেয়ে ফেলা হলো।

অনদিকে
শাসকরা রটনা চালালো- রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলনকারীরা পাকিস্তান ধ্বংস করতে চায়।

গ্রাফিক
নভেলে লেখা হয়েছে, “১১ই মার্চ ভোরবেলা শত শত ছাত্রকর্মী
ইডেন বিল্ডিং, জেনারেল পোস্ট অফিস ও অন্যান্য জায়গায়
পিকেটিং শুরু করল।”

মুজিবকে
সেখানে বলতে দেখা যায়, “আমাদের ওপর দফায় দফায় লাঠিচার্জ হলো। অনেকে আহত হলাম। সকাল আটটায় জেনারেল পোস্ট অফিসের সামনে ছাত্রদের ওপর ভীষণভাবে লাঠিচার্জ হলো।”

শেখ
মুজিব, শামসুল হকসহ সেদিন আরো অনেককে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হলো।

কিন্তু
জেলে যাওয়ার আগে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার যে দাবি তারা
ছড়িয়ে দিলেন, তা যেন বিচ্ছুরিত
হতে লাগলো চারদিকে।

জেলে
থেকেই পাশের মুসলিম গার্লস স্কুলের ছাদ থেকে ছাত্রীদের স্লোগান শুনতে পেলেন মুজিব ও অন্য বন্দিরা।

‘বন্দি
ভাইদের মুক্তি চাই/রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই/পুলিশি নির্যাতন চলবে না…।’

মুজিবকে
সেখানে বলতে দেখা যায়, “হক সাহেব, ঐ
দেখুন, আমাদের বোনেরা বেরিয়ে এসেছে। এরা আর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা
না করে পারবে না।

“যে
পাঁচ দিন আমরা জেলে ছিলাম প্রতিদিন মেয়েরা সকাল দশটা থেকে বিকাল চারটা পযন্ত স্লোগান দিয়ে যেত।”

এদিকে
ধীরে ধীরে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন দানা বেঁধে উঠেছে। এসময় শেরে বাংলা, বগুড়ার মোহাম্মদ আলী, তোফাজ্জেল আলী, ড. মালেক, আনোয়ারা
খাতুনসহ আরো অনেকে মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছেন। পূর্ব পাকিস্তানের আইনসভার অধিবেশন এবং আন্দোলন, প্রতিবাদ, শোভাযাত্রাও চলছে সমানতালে।

“জেল
থেকে ছাড়া পেতেই আবার বাংলা ভাষার দাবিতে ১৬ তারিখ সকাল
দশটায় যোগদান করলাম বিখ্যাত আমতলার ছাত্রসভায়। সকলের সমর্থনে আমাকে সভাপতিত্ব করতে হলো।”

ভাষার
দাবিতে শোভাযাত্রা করে আইন পরিষদে খাজা নাজিমুদ্দীনের কাছে স্মারকলিপি পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সেই সভায়।
বহু মানুষের জমায়েত হয় শোভাযাত্রায়। স্মারকলিপি
দেওয়ার পর পুলিশ জনতার
ওপর কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে, লাঠিচার্জ করে। আহত শেখ মুজিবকে হাসপাতালে নিতে হয়।

গ্রাফিক
নভেলে বলা হয়েছে, “খাজা সাহেব এবং মুসলিম লীগের নেতারা ভাবলেন জিন্নাহ সাহেবকে দিয়ে উর্দুর কথা বলিয়ে নিতে পারলেই আর কেউ বিরোধিতা
করবে না। ১৯ মার্চ জিন্নাহ
ঢাকা এলে তাকে অভিনন্দন জানাতে তেজগাঁ বিমানবন্দরে হাজির হলো হাজার হাজার জনতা।”

শেখ
মুজিবকে নভেলে বলতে দেখা যায়, “বৃষ্টির ভেতর তিনি রেসকোর্স ময়দানে সভা করতে এলেন। আমরাও প্রায় পাঁচশত ছাত্র বৃষ্টিতে ভিজে বিমানবন্দর থেকে সেখানে গিয়ে হাজির হলাম।”

সভায়
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বললেন, “সবার উদ্দেশে বলতে চাই, উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।

“জিন্নাহ
সাহেবের এই কথার পর
ভিড়ের মাঝে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। হঠাৎ একজন ছাত্র বলে উঠল…. না।

“সবাই
ধীরে ধীরে গর্জে উঠলো। না, না, না, না না……।

মুজিবকে
গ্রাফিক নভেলে বলতে দেখা যায়, “আমাদের ‘না’ শুনে জিন্নাহ সাহেব প্রায় পাঁচ মিনিট চুপ করে রইলেন। এরপর তিনি যতদিন বেঁচে ছিলেন কোনো দিন বলেন নাই, উর্দুই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে।

“এর
অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জিন্নাহ সাহেব মারা গেলেন। নতুন গভর্নর জেনারেল হলেন খাজা নাজিমুদ্দীন। আর মুসলিম লীগের
বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন জোরেসোরে চলতে লাগলো।”

গ্রাফিক
নভেল মুজিবের অষ্টম পর্বের মোড়ক উন্মোচন হয় গত ৭
ফেব্রুয়ারি। তার পরপরই এবারের পর্বটি পড়ে ফেলেছে ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া রেজোয়ানা আহমেদ।

সে
বললো, “ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর কত বড় অবদান
ছিল তা এই গ্রাফিক
নভেল পড়ার আগে আমার জানা ছিল না। মুগ্ধ হয়ে পড়ছিলাম।” 

বঙ্গবন্ধুর
অসমাপ্ত আত্মজীবনী প্রকাশের পর শিশু-কিশোর
ও তরুণদের কাছে তার ঘটনাবহুল জীবন নতুন রূপে তুলে ধরার জন্য বইটিকে গ্রাফিক নভেলের রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

বিশ্বের
বিভিন্ন দেশে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নিয়ে গ্রাফিক নভেল হলেও বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগ
এটাই প্রথম। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ গ্রাফিক
নভেল মুজিবের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে সিআরআইয়ের উদ্যোগে এর বিভিন্ন পর্ব
প্রকাশিত হয়ে আসছে।