ক্যাটাগরি

সাকিব ছুটি চাওয়ায় ‘মন খারাপ’ বিসিবি সভাপতির

বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ড
সফরে যাওয়ার আগের দিন কোচিং স্টাফ ও ক্রিকেটারদের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি
হয়ে সাকিবকে ছুটি দেওয়া নিয়ে কথা বলেন বিসিবি প্রধান।

এপ্রিলে বাংলাদেশ
দলের শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট বাদ দিয়ে সাকিবের আইপিএল খেলতে চাওয়া ও বোর্ড তাকে ছুটি
দেওয়া নিয়ে দেশের ক্রিকেটে আলোচনার ঝড় গত কয়েকদিন থেকেই। আইপিএলসহ বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি
খেলতে ক্রিকেটারদের ছুটি চাওয়া নতুন কিছু নয়। তবে দেশের খেলা বাদ দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি
লিগ খেলার অনুমতি পাওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।

মন খারাপের কথা জানিয়ে
বিসিবি সভাপতি মনে করিয়ে দিলেন, ক্রিকেটারদের গড়ে তোলায় বোর্ডের অবদান কতটা।

“বিব্রত ঠিক নই, তবে মন খারাপ। আমাকে
যদি বলেন, মন খারাপ। বোর্ড একজন ক্রিকেটারের পেছনে ১০-১৫ বছর ধরে বিনিয়োগ করে। একটা
তো হলো খেলাধুলা সম্পর্কিত চুক্তি। এর বাইরেও ওদেরকে যে সুযোগ-সুবিধা আমরা দেই, এটা
তো আগে কখনও চিন্তাও করা যেত না।”

“এই জায়গায়, দল দুটি টেস্ট ম্যাচ
হারার পর (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে)… শুধু এই দুটি ম্যাচই নয়, আফগানিস্তানের কাছে হেরেছি, পাকিস্তান-ভারতের
কাছে খারাপভাবে হেরেছি, এরপর এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দেশের মাটিতে হারার পর যদি
কেউ বলে যে আমি না খেলি… আমার ধারণা ছিল, এত হারার পর সবাই
উঠেপড়ে লাগবে যে পরের ম্যাচ জিততেই হবে। সেখানে কেউ যদি বলে টেস্ট খেলব না, ফ্র্যাঞ্চাইজি
খেলব, আর কিছু বলার থাকে না। আমাদের ভাবনা খুবই পরিষ্কার। কাউকে আমরা জোর করে আটকাব
না।”

ক্রিকেটারদের দুঃসময়ে
বোর্ড যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে, দলের বাজে সময়ে সাকিব সেটি মনে না রাখায় আহত হয়েছেন নাজমুল
হাসান।

“একটা জিনিস খেয়াল করেন, আজকে যারা
দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে বিশ্বের নামকরা ক্রিকেটার, প্রথম ১০ বছর বা ৬ বছর, ওদের গড়
কেমন ছিল? ১২-১৫ করে গড় থাকত। আমরা তো তখন তাদের বাদ দেইনি। সময় দিয়েছি উন্নতি করার,
তার পর তারা এই জায়গায় এসেছে।”

“যে সময়টায় তারা দেশের জন্য কিছু
করবে, তখনই যদি…. তবে এটা তাদের ইচ্ছা। আমরা এভাবে
সময় নষ্ট করতে চাই না। কারণ জোর করে খেলিয়ে লাভ হয় না। বিশেষ করে টেস্ট ম্যাচ। এটা
মানসিক খেলা।”

এর আগে ২০১৭ সালেও
টেস্ট ক্রিকেট থেকে ৬ মাসের বিরতি চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। সেবার শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা
সফরে তাকে ছুটি দিয়েছিল বোর্ড। এখন বোর্ড সভাপতি বলছেন, সাকিবের টেস্ট খেলার ইচ্ছে
নেই বেশ আগে থেকেই।

“মূল ব্যাপার একটিই। সাকিবকে কি
খেলানো যেত না জোর করে? ওকে না দিলে (ছুটি) কি করত? হয়তো খেলত। কিন্তু আমরা ওটা চাই
না। আমরা চাই যারা এই খেলাটাকে ভালোবাসে, তারাই খেলুক।”

“আপনারা একটা জিনিস দেখূন। সাকিব
তো আরও ৩ বছর আগেই টেস্টে খেলতে চায়নি। (২০১৭ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের কথা মনে
করিয়ে দেওয়ার পর) না না… এমনিতেই ও খেলতে চায়নি টেস্ট ক্রিকেট।
তখন ওকে অধিনায়ক করে দেওয়া হলো। জোর করে চেষ্টা করলাম তো। লাভ হলো না। আমরা সামনে দিকে
এগোতে পারছি না, পেছাচ্ছি আরও।”

দলের খারাপ সময়ে
সাকিব এমন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই খারাপ লাগা বেশি, আবারও বললেন বিসিবি সভাপতি।

“আমার কাছে খারাপ লেগেছে, যে সময়টায়
যে সব ক্রিকেটারদের কাছ থেকে বেশি আশা করেছিলাম যে দলকে সমর্থন করবে, আমাদেরকে আশ্বস্ত
করবে যে ‘অসুবিধা নেই পাপন ভাই, আমরা পরের
ম্যাচ জিতব’, তখন সেটা না পেলে কষ্ট লাগেই।
শকিং তো বটেই। এটা শকিং না হলে আর কোনটা শকিং… তবে ঠিক আছে। আমি এটা নিয়ে হুলস্থুল করতে চাই না।”