দুদকের
ওই মামলায় বিচারিক আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিল। পরে হাই কোর্ট এ
সাজা থেকে তাকে খালাসও দিয়েছি। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে হাই কোর্টে
মামলাটির ফের শুনানি হয়।
বুধবার
সে শুনানি শেষ হলে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল
হকের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করে।
আদালতে
হাজী সেলিম ও তার স্ত্রীর আপিলের পক্ষে শুনানি করেন আব্দুল বাসেত মজুমদার ও আইনজীবী
সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
আইনজীবী
সাঈদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিচারিক
আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম ও তার স্ত্রীর করা আপিলের
শুনানি আজকে শেষ হয়েছে। হাই কোর্ট আগামী ৯ মার্চ রায় ঘোষণা করবেন।”
আপিল
শুনানিতে খালাসের পক্ষে কী যুক্তি দেখিয়েছেন- জানতে চাইলে এ আইনজীবী বলেন, “আমরা
বলেছি, বিচারিক আদালতে এ মামলাটির বিচারকাজ শেষ হয়েছে চার দিনে। তার মধ্যে একদিনে
২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনে সুনির্দিষ্ট কোনো
প্রমাণ এ মামলায় দেখাতে পারেনি দুদক। ১৯৮৭, ৮৮, ৯০ সালে অর্জিত সম্পদে মূল্য
সংযোজন (ভ্যালু অ্যাড) অ্যাড করে বলা হয়েছে তিনি তার সম্পদের মূল্যমান ঠিক নেই।
“এছাড়া
মামলাটি শুরু হয়েছে দুজনের (হাজী মো. সেলিম ও তার স্ত্রী) বিরুদ্ধে। আপিল চলাকালে উনার
স্ত্রী মারা গেলেন। সম্পত্তি ভাগাভাগি হল না। ফলে মামলাটির পুনঃবিচার করা ছাড়া আর
কোনো কিছুর সুযোগ নেই। ফলে বিচারিক আদালতে মামলাটির পুনর্বিচার চেয়ে দণ্ডের সাজা
থেকে খালাস চেয়েছি।”
দুদকের
আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, “সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তিনি (হাজী সেলিম) বিচারিক
আদালতের রায়ে সাজা পেয়েছেন। রায় প্রদানের ক্ষেত্রে আইন-কানুনের কোনো ব্যত্যয়
ঘটেনি। ফলে হাজী সেলিমের সাজা বহাল রাখার দাবি জানিয়েছি।”
হাজী সেলিমের পুরনো মামলার নথি তলব হাই কোর্টের
সেনা
নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর
হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে
দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল রায়ে বিচারিক আদালত ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয় তাকে।
পরে
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম এ রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করেন। ২০১১
সালের ২ জানুয়ারি হাই কোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেয়।
হাই
কোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। ওই আপিলের শুনানি শেষে
২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়।
সেই
সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাই কোর্টে শুনানির নির্দেশ দেয় দেশের সর্বোচ্চ
আদালত।
সে
নির্দেশনার আলোকে গত বছর ৯ নভেম্বর দুদক হাজী সেলিমের আপিল দ্রুত শুনানির জন্য
আবেদন করে।
সে
আবেদনের শুনানি করে আদালত ১১ নভেম্বর এ মামলার বিচারিক আদালতের নথি তলব করে। নথি
আসার পর গত ৩১ জানুয়ারি আপিলের শুনানি শুরুর পর বুধবার তা শেষ হয়।
আরও পড়ুন
হাজী সেলিমকে উপদেষ্টামণ্ডলীতে রেখে আ. লীগের ঢাকা দক্ষিণের কমিটি
নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারপিটের মামলায় ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র