ক্যাটাগরি

পঞ্চাশের সম্পর্ক ’নতুন অধ্যায়ে’ নিতে চায় জাপান-বাংলাদেশ

বৃহস্পতিবার
জাপানের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী হিরোশি সুজুকির দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এ কথা জানিয়েছেন
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

বাংলাদেশের
অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে জাপানের সহযোগিতা ও বিনিয়োগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আশা
করব, ২০২২ এই দুই দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচিত হবে এবং সেটাতে স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্ক
যেমন স্থাপিত হবে।

“আর
আমাদের ব্যবসায়, বিনিয়োগসহ অন্যান্য যে সম্পর্কগুলো রয়েছে এবং ওদের যে বিগ-বি পরিকল্পনাটা
আছে, বিশেষ করে মাতারবাড়িকে কেন্দ্র করে, পুরো আঞ্চলিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কীভাবে আরও
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, সেভাবেই তারা এগোচ্ছে।”

তবে
করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির কারণে বিস্তারিত পরিকল্পনা এখনই নেওয়া সম্ভব হচ্ছে
না বলে জানান তিনি।

১৯৭২
সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল জাপান। তারপর সম্পর্কের
গভীরতায় বাংলাদেশে উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অংশীদার এই দেশটি।

মাসুদ
বিন মোমেন বলেন, “সে উপলক্ষে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে
অনেক কর্মসূচি নেওয়া হবে। এবং দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীরা যাতে সফর করতে পারে।”

রাষ্ট্রপতি
মো. আবদুল হামিদ ইতোমধ্যে জাপানের সম্রাট নারুহিতো এবং তার স্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের
আমন্ত্রণ জানিয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

তিনি
বলেন, জাপানের উপমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব দিকের পাশাপাশি আঞ্চলিক
সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

“জাপান
ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনা করেছে। সেখানে আমাদেরকে সম্পৃক্ত করতে চায় তারা।
আমরাও বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছি।”

২০১৪
সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর এবং তারপর জাপানি প্রধানমন্ত্রীর সফরের কথা
উল্লেখ করে সচিব বলেন, “সে সময় আমরা দুই দেশের সম্পর্ককে কমপ্রিহেন্সিভ একটা সম্পর্ক
হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলাম। অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়গুলো সেখানে এসেছে।
আর কূটনৈতিক বিষয়গুলো তো সেখানে আছেই।

“তবে
বর্তমানে চাচ্ছি এবং আজকেও আলোচনা করেছি, এই কমপ্রিহেন্সিভ রিলেশনশিপটাকে কীভাবে আমরা
স্ট্র্যাটেজিক রিলেশনশিপে উন্নীত করতে পারব এবং সেটার উপাদানগুলো কি কি হবে। …তারা
মোটামুটি এ ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ দেখিয়েছে।”

দক্ষিণ
চট্টগ্রামের বিষয়ে জাপানের বেশ আগ্রহ রয়েছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “এটির বিষয়ে,
উত্তর-পূর্ব ভারত, মিয়ানমার আছে- সব মিলিয়ে এটা তাদের বড় পরিকল্পনার অংশ। আমরাও সেটার
সাথে শরিক হতে চাই বা ইতোমধ্যে হয়েছি।’

রোহিঙ্গাদের
বিষয়ে যথেষ্ট আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেন, “আমরা তাদের জানিয়েছি
সর্বশেষ মিয়ানমারের ক্যু এর পরে কীভাবে আমাদেরকে অবস্থান নিতে হচ্ছে। আমরা আমাদের যে
প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলাম, সেটা তাদের কাছে ব্যাখ্যা করেছি এবং তারা আমাদের অবস্থানকে
বুঝতে পেরেছে।

“আমাদের
মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রত্যাবাসন এবং সেটিকে তারা সম্মান করে। এই প্রত্যাবাসনের বিষয়ে
আমরা তাদের সহযোগিতা চেয়েছি।”

চীনের
মধ্যস্থতায় বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ত্রিপক্ষীয় আলোচনার ফলা ফলাফল দেখতে চাওয়ার
কথা জাপান উল্লেখ করেছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, “আমরা চাই রোহিঙ্গারা যখন আমাদের
সীমান্ত অতিক্রম করে ওপারে যাবে, তখন তাদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও টেকসই জীবিকা নিশ্চিত
করার ব্যাপারে আশেপাশের প্রতিবেশী দেশকে আমরা বিশেষ ভূমিকায় দেখতে চাই।”