দুদকের
এক আবেদনে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ
দেন বলে কমিশনের উপ-পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন জানিয়েছেন।
তিনি
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পি কে হালদারের বিষয়ে তদন্তের স্বার্থে তার
অবৈধ সম্পদ জব্দের জন্য আমরা আদালতে একটি আবেদন করেছিলাম। বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালত
ওই সব সম্পত্তি জব্দের আদেশ দিয়েছেন।”
এর
আগেও পি কে হালদারের (প্রশান্ত কুমার হালদার) আরও সম্পত্তি জব্দ হয়েছে বলে দুদকের
এই কর্মকর্তা জানান।
জব্দ
হওয়া সম্পত্তির বিষয়ে সালাউদ্দিন জানান, রাজধানীর উত্তরায় পি কে হালদারের একটি
১০তলা ভবন ছাড়াও গ্রিন রোড, উত্তরা, দিয়াবাড়ি, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও নরসিংদীসহ
বিভিন্ন এলাকায় থাকা পি কে হালদারের ওইসব জমি জব্দের আদেশ ইতোমধ্যে হয়েছে।
প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার) ফাইল ছবি
এনআরবি
গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি
নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার
কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ
বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের
নিয়ন্ত্রণ নেন।
এই
চার কোম্পানি হল- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস
(আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স
অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি
(বিআইএফসি)।
এসব
কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অঙ্কের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে
তদন্তকারীদের ভাষ্য।
এর
মধ্যে আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ
পালানোর পর দুদক তার ২৭৫ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।
এ
মামলায় ইতোমধ্যে পি কে হালদারের বেশ কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক।
পি কে হালদারের ‘৬২ সহযোগীর’ খোঁজ পেয়েছে দুদক
পি কে হালদারের ‘সহযোগী’ অবন্তিকা দুদকের রিমান্ডে
পিপলস লিজিংয়ের খেলাপি ঋণের টাকা দিতেই হবে: হাই কোর্ট
পি কে হালদার এখন দেশে ‘ফিরছেন না’
পি কে হালদারকে ধরে আনতে ‘ইন্টারপোলে যাচ্ছে’ দুদক
এছাড়া
সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা পি
কে হালদারের বিরুদ্ধে আরেকটি অনুসন্ধান করছে দুদক।
দুদকের
উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান এ অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছেন। এ
অনুসন্ধানের অংশ ইতোমধ্যে পাঁচটি মামলা করেছে দুদক। এক মামলায় পি কে হালদারের
ঘনিষ্ঠ সহযোগী রাশেদুল হক ও উজ্জ্বল কুমার নন্দীসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা
হয়েছে।
রাশেদুল
ও উজ্জ্বল আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে পি কে হালদারের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে বেশ
কয়েকজন বড় ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন বড় কর্মকর্তার নাম বলেছেন বলে দুদক
কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
পি
কে হালদারকে গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে।
তার মা লীলাবতী হালদার এবং অবন্তিকা বড়ালসহ ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে
হাই কোর্ট।