বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত
রুলের চূড়ান্ত শুনানির পর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের হাই কোর্ট
বেঞ্চ রায় ঘোষণার দিন ঠিক করে দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে
শুনানি করেন আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি
জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই শিক্ষকদের টাইম স্কেলের যে সুবিধা দেওয়া হয়েছে
তা আইন অনুযায়ী নিয়ম মেনেই দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও মনে
করে যে প্রাপ্য অনুযায়ী এ টাকা তাদের দেওয়া হয়েছে। শুধু অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে যে, তাদের
অনুমতি ছাড়াই এ টাকা দেওয়া হয়েছে।
“কিন্তু এমন কোনো আইন
বা নিয়ম নাই যে, এ টাকা দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের
অনুমতির দরকার আছে। যদিও অভ্যন্তরীণ অনেক ডকুমেন্টে দেখা গেছে প্রতিটা ধাপে অর্থ মন্ত্রণালয়
এ টাকা দেওয়ার বিষয়ে অবগত ছিল, এবং সম্মতিও দিয়েছে। ”
অন্যদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি
জেনারেল তুষার কান্তি রায় বলেন, “এটা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বিষয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত
চ্যালেঞ্জ করে তারা প্রশাসিনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারতেন। অনেকে গিয়েছেনও। ফলে যে
সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করা হয়েছে সেটি গ্রহণযোগ্য না। কারণ এটা রিটের বিষয়
না।”
এই আইন কর্মকর্তা বলেন,
“উভয় পক্ষের শিুনানির পর আদালত আগামী রোববার রায়ের জন্য রেখেছেন।”
২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি
জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রাথমিক শিক্ষক সমাবেশে দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়ে কর্মরত এক লাখ চার হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা।
সে ঘোষণা বাস্তবায়নে
রাষ্ট্রপতির আদেশে পরিপত্র ও গেজেট প্রকাশ করা হয়। সেই পরিপত্র ও গেজেটের পর জাতীয়
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সরকারের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে আসছিলেন।
কিন্তু গত বছর ১২ অগাস্ট
অর্থ মন্ত্রণালয় ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইম স্কেল ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র
জারি করে।
আদেশটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ
করে গত বছর ৩১ অগাস্ট হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
বাংলাদেশ প্রাথমিক
শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহীর গাঙ্গোপাড়া বাগমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক সেই আবেদনটি করেন।
ওই দিন হাই কোর্ট ছয়
মাসের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করে। এরপর হাই কোর্টের আদেশ
স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে যায় রাষ্ট্রপক্ষ।
সে আবেদনের শুনানি
করে গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর চেম্বার বিচারক হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেয়।
তখন চেম্বার আদালতের
আদেশ বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রিটকারী পক্ষ।
গত ১৩ জানুয়ারি সে
আবেদনের শুনানি করে আপিল বিভাগ রিটটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। সেজন্য হাই কোর্টের এই
বেঞ্চটিও নির্ধারণ করে দেয়। আদেশ পাওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে
বলা হয়।
তবে হাই কোর্টের আদেশে
আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি আপিল বিভাগ।
ফলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাই কোর্ট যে আদেশ দিয়েছিল, তা স্থগিতই
থাকছে।