টি-টোয়েন্টি সিরিজের
দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের জয় ৪ রানে। ৫ ম্যাচ সিরিজে কিউরা
এগিয়ে ২-০তে।
ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি
ওভালে বৃহস্পতিবার নিউ জিল্যান্ড ২০ ওভারে তোলে ২১৯ রান। মার্টিন গাপটিল খেলেন ৫০ বলে
৯৭ রানের ইনিংস। ফিফটি আসে কেন উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকেও, শেষ দিকে ঝড় তোলেন জিমি নিশাম।
রান তাড়ায় এক পর্যায়ে
লড়াই থেকেই ছিটকে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। পরে সপ্তম উইকেটে স্টয়নিস ও স্যামসের ব্যাটিং তাণ্ডব
ও রেকর্ড জুটিতে জমে ওঠে ম্যাচ। কিন্তু শেষ ওভারে বিদায় নেন দুজনই। ২০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ায়
করতে পারে ২১৫।
নিজের ৫০তম টি-টোয়েন্টিতে
৪ উইকেট নিয়ে নিউ জিল্যান্ডের বোলিং নায়ক মিচেল স্যান্টনার। এক ওভারে যখন তিনি নিলেন
তিন উইকেট, অস্ট্রেলিয়া তখন ধুঁকছে ১১৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে। শেষ ৭ ওভারে প্রয়োজন ছিল
১০৭ রান, মূল ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টিকে কেবল স্টয়নিস।
সেঞ্চুরি না পেয়ে মার্টিন গাপটিলের হতাশা। ছবি : টিভি থেকে স্ক্রিনশট।
নিজের প্রথম প্রথম টি-টোয়েন্টি
ফিফটির জন্য এই দিনটিকেই বেছে নিলেন স্টয়নিস। বাঁহাতি পেসার স্যামস আটে নেমে দেখালেন
তার ব্যাটিং সামর্থ্যের ঝলক। দুজনের জুটিতে এলো ৩৭ বলে ৯২ রান, সপ্তম উইকেটে যা টি-টোয়েন্টির
বিশ্বরেকর্ড।
শেষ ওভারে জিমি নিশাম
এলেন ম্যাচে তার একমাত্র ওভারটি করতে। অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ১৫ রান। প্রথম বলটি ফুল
টস, কিন্তু সীমানায় ধরা পড়লেন স্যামস। পরের দুই বলে স্টয়নিস পারলেন না রান নিতে। চতুর্থ
বলে তার ছক্কায় আবার ম্যাচে রোমাঞ্চ। পঞ্চম বলে স্টয়নিসও ক্যাচ দিলেন সীমানায়। নাটকীয়তার
সমাপ্তি!
শেষে গিয়ে যেমন স্বস্তি
পেয়েছে নিউ জিল্যান্ড, ম্যাচের প্রথম ভাগে উল্টো অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের ওপেনার গাপটিলের।
টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয়বার তিন অঙ্ক ছোঁয়ার কাছে গিয়ে থমকে গেছেন তিনি তিন রানের জন্য।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা
কিউইরা টিম সাইফার্টকে হারায় শুরুতে। দ্বিতীয় উইকেটে গাপটিল ও কেন উইলিয়ামসন গড়েন নিউ
জিল্যান্ডের রেকর্ড ১৩১ রানের জুটি।
২৭ বলে ফিফটি ছোঁয়ার
পথে ৪টি ছক্কা মারেন গাপটিল। ফিফটির পর ছক্কা মারেন আরও ৪টি। নবম ছক্কার চেষ্টাই ডেকে
আনে বিপদ। সীমানায় দারুণ ক্যাচ নেন স্টয়নিস।
সেঞ্চুরি না পেলেও ৮
ছক্কার পথে রোহিত শর্মাকে ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড নিজের করে নেন
গাপটিল।
পরে উইলিয়ামসন বিদায়
নেন ৩৫ বলে ৫৩ রান করে। শেষ দিকে নিশামের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে কিউইরা পার হয় দুইশ। ৬
ছক্কায় অপরাজিত থাকেন তিনি ১৬ বলে ৪৬ রান করে।
অস্ট্রেলিয়ার রান তাড়ায়
ওপেনার ম্যাথু ওয়েড বিদায় নেন ১৫ বলে ২৪ করে। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ১২ করতে খেলেন ১৪
বল। বড় ভরসা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ফিরে যান ৩ রানেই।
রান বাড়ানোর কাজটি তখন
করেন কেবল জশ ফিলিপি। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা ব্যাটসম্যান ৩২ বলে করেন ৪৫।
তাকে থামানোর পর ওই
ওভারেই টানা দুই বলে অ্যাশটন অ্যাগার ও মিচেল মার্শকে ফেরান স্যান্টনার। বড় জয়ের আশায়
তখন কিউইরা।
সেখান থেকেই স্টয়নিস
আর স্যামসের ঝড়ো ব্যাটিং। ইশ সোধির ওভারে আসে ২০ রান, টিম সাউদির ওভারে ২৫, কাইল জেমিসনের
ওভারে ১৭। টানা ৩ ওভারে ৬২ রান!
৫০ তম টি-টোয়েন্টির আগে মিচেল স্যান্টনারের হাতে স্মারক তুলে দেন ইশ সোধি। ছবি : ছবি : নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটের টুইটার।
১৮তম ওভারে ট্রেন্ট
বোল্ট দারুণ বোলিংয়ে দেন মাত্র ৬ রান। পরের ওভারে আবার সাউদির ওভার থেকে আসে ১৫। কিন্তু
শেষ ওভারে ১৫ আর আসেনি। স্যামস-স্টয়নিসের বিদায়ের পর ম্যাচের শেষ বলে জাই রিচার্ডসন
মারেন চার। দুই দলের ব্যবধানও তখন চার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
নিউ জিল্যান্ড : ২০ ওভারে ২১৯/৭ (গাপটিল ৯৭, সাইফার্ট ৩, উইলিয়ামসন ৫৩, নিশাম
৪৫*, ফিলিপস ৮, কনওয়ে ২, স্যান্টনার ০, সাউদি ৬, জেমিসন ০*; স্যামস ৪-০-৪৬-১, অ্যাগার
৩-০-৩০-০, জাই রিচার্ডসন ৪-০-৩৯-১, কেন রিচার্ডসন ৪-০-৪৩-৩, জ্যাম্পা ৪-০-৪৩-১, স্টয়নিস
১-০-১৭-০)।
অস্ট্রেলিয়া : ২০ ওভারে ২১৫/৮ (ওয়েড ২৪, ফিঞ্চ ১২, ফিলিপি ৪৫, ম্যাক্সওয়েল
৩, স্টয়নিস ৭৮, অ্যাগার ০, মার্শ ০, স্যামস ৪১, জাই রিচার্ডসন ৪*, কেন রিচার্ডসন ০*;
সাউদি ৪-০-৪৭-১, বোল্ট ৪-০-৩০-০, জেমিসন ৪-০-৫৬-০, স্যান্টনার ৪-০-৩১-৪, সোধি ৩-০-৪১-২,
নিশাম ১-০-১০-২)।
ফল : নিউ জিল্যান্ড ৪ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৫ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ২-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ : মার্টিন গাপটিল।