ক্যাটাগরি

পিলখানা হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এ বছরই চায় বিএনপি

এক যুগ আগে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত
সেনা কর্মকর্তাদের কবরে বৃহস্পতিবার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ
উদ্দিন আহমেদ এই দাবি জানান।

তিনি বলেন, “দীর্ঘ ১২টি বছর অতিক্রান্ত
হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকান্ডের চূড়ান্ত ফয়সালা করা সম্ভব হয়নি। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা
আমাদেরকে হতাশ করেছে, দেশবাসী মর্মাহত হয়েছে।এই হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত স্লথ গতিতে চলছে।

“এই বছরের মধ্যে লিভ টু আপিল এবং আপিলের
কার্য্ক্রম শুরু হবে এমন কোনো আশা, এমন কোনো লক্ষণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এই হত্যাকাণ্ডের
দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার জন্যে বিচার বিভাগের প্রতি আমরা আবেদন জানাচ্ছি। আমরা আশা
করি, এই বছরের মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের চূড়ান্ত ফয়সালা করা হবে, চূড়ান্ত রায় দেওয়া হবে।”

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায়
সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহে জওয়ানদের হাতে মারা যান ৫৭ সেনা কর্মকর্তা।
রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহে বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান। ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে
পড়ে জওয়ানদের বিদ্রোহ।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন
কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে কোর্ট অব ইনকোয়ারির
প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানান অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাফিজ।

তিনি বলেন, “এই ধরনের হত্যাকাণ্ড বাংলাদে্শের
জাতীয় জীবনে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করি। এই হত্যাকাণ্ড
ঘটানো হয়েছে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করার জন্যে। এর বেনিফিসিয়ারি কারা সেটিও
দেশবাসী পরিষ্কার জানতে চায়।”

হাফিজ অভিযোগ করে বলেন, “ইতিমধ্যেবিচারিক
আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতাকে খালাস দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের
সাথে যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। সবাইকে আনা হয় নাই,
কয়েকজনকে আনা হয়েছে।

“এই হত্যাকাণ্ডের যারা পরিকল্পনাকারী,
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী তারা এখন পর্যন্ত পর্দার অন্তরালে রয়েছে। দেশবাসীর সামনে
তাদের পরিচিতি স্পষ্ট নয়। আমরা সরকারকে অনুরোধ জানাব হত্যাকাণ্ডের  যারা পরিকল্পনাকারী, দেশি-বিদেশি শক্তি, ষড়যন্ত্রকারী
তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক।”

তিনি আরও বলেন, “এই হত্যাকাণ্ডে নিহত
ব্যক্তিবর্গের সাথে একজন সুবেদার মেজর, যিনি অফিসারদেরকে রক্ষা করার জন্য …তার
পরিবার এখন পর্যন্ত কোনো সুযোগ-সুবিধা পায় নাই। আমি এ ব্যাপারে সরকারের আশু দৃষ্টি
কামনা করছি। একই সঙ্গে যারা নিহত হয়েছিলেন সেই শহীদ পরিবারসমূহ কষ্টে, মনোবেদনার মধ্য
দিয়ে দিন যাপন করছেন। তাদের এবং শহীদদের আত্মার শান্তির বিধান করার জন্যে দ্রুত এই
নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা আশা করি।”

সকাল পৌনে ১১টায় হাফিজ উদ্দিন আহমেদের
নেতৃত্বে দলের নেতারা নিহতদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং দোয়া করেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর,
আলতাফ হোসেন চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ফজলে এলাহী
আকবর, মো. ইসহাক, মনিষ দেওয়ান, কামরুজ্জামান, মো. হানিফ, সারোয়ার হোসেন, সাঈদুল ইসলাম,
মো. হাসান, বিএনপি নেতা শামীমুর রহমান শামীমুর, শাহ খালেদ হাসান চৌধুরী, চেয়ারপারসনের
প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।