আগামী মাসের প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে
এনইসি সভায় এডিপি সংশোধনের এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য তোলা হবে বলে পরিকল্পনা কমিশনের এডিপি সংশোধনের জন্য
সমন্বয় কার্যক্রম বিভাগের প্রধান মো. খন্দকার আহসান
হোসেন জানিয়েছেন।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন করা হয়েছিল। সেখান থেকে ৭ হাজার
৫০২ কোটি টাকা বরাদ্দ কমানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে।
সংশোধিত এডিপির যে
আকার এবার প্রস্তাব করা হচ্ছে, তা গত অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ৪ হাজার ৭২২
কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। গত ২০১৯-২০
অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি আকার ছিল ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় এডিপি সংশোধনের
এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে পরিকল্পনা মন্ত্রী
ও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে এ বৈঠক হয়।
মো. খন্দকার আহসান হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এডিপি বাস্তবায়নকারী সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর
অর্থ বরাদ্দ চাহিদার ভিত্তিতে এডিপি সংশোধনের এই প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশেনের বর্ধিত
সভায় উপস্থাপন করে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
১৩% ব্যয় বাড়িয়ে সঙ্কটকালের বাজেট
মূল এডিপি থেকে যে অর্থ কাটছাঁটের প্রস্তাব করা হয়েছে,
তার পুরোটাই বৈদেশিক সহায়তা থেকে কাটা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রকল্প বাস্তবায়নকারী
সংস্থাগুলোর চাহিদার ভিত্তিতে এই সংশোধন করা হচ্ছে। সংস্থাগুলো
বৈদেশিক সহায়তার বরাদ্দ থেকে ৭ হাজার ৫০২ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে, তাই ওই অর্থ কেটে
চলতি অর্থবছরের এডিপি সংশোধন করা হচ্ছে।”
সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে কোনো অর্থ কাটা হয়নি
বলে জানান পরিকল্পনা কমিশনের এই কর্মকর্তা।
কমিশনের কার্যক্রম বিভাগের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা জানান,
সংশোধিত এডিপির যে প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে, তাতে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ
৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে ৬৩ হাজার
কোটি টাকার যোগান দেওয়া হবে।
মহামারী পরিস্থিতিতে সরকারের অর্থ যোগানে কোনো সমস্যা হচ্ছে
কীনা বা বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে কার্যক্রম
বিভাগের যুগ্ম প্রধান মো. ছায়েদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বাস্তবায়নকারী
সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেছি। বরাদ্দ পাচ্ছে না- এমন অভিযোগ কেউ তোলেনি। অর্থাৎ
সবাই চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ পাচ্ছেন।”
পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভার প্রস্তাব অনুযায়ী সংশোধনের
জন্য যে প্রস্তাব করা হচ্ছে, তাতে সর্বোচ্চ ৪৯ হাজার ২১২ কোটি টাকার বরাদ্দ রয়েছে পরিবহন
খাতে। মূল এডিপিতেও এ খাতে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ১৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ
খাতে। সংশোধিত এডিপিতে এ খাত ২৬ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা পাচ্ছে। মূল এডিপিতে তা ২৫ হাজার
৭৯৫ কোটি টাকা ছিল।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৪
হাজার ৫৭০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে শিক্ষা ও ধর্ম খাতের জন্য। মূল এডিপিতে
এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।
চতুর্থ
সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতে। এ খাতের জন্য রাখা হচ্ছে ২১ হাজার ৯০০ কোটি
টাকা। মূল এডিপিতে তা ২৪ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা ছিল।
পল্লী
উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতে ১৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে
সংশোধিত এডিপিকে, যেখানে মূল এডিপির বরাদ্দ ছিল ১৫ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।
স্বাস্থ্য,
পুষ্টি, জনসংখ্য্যা ও পরিবার কল্যাণ খাতে ১৪ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে
সংশোধিতি এডিপিতে। মূল এডিপিতে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা।
আর
এডিপি সংশোধনে বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ১১ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ
প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মূল এডিপিতে ১৮ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা ছিল।