দিবা-রাত্রির টেস্টে ১০ উইকেটে জিতেছে ভারত। রোহিত শর্মা
ও শুবমান গিল ৭.৪ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলেন ৪৯ রানের ছোট লক্ষ্য।
ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা রোহিত ২৫ বলে করেন ২৫। একটি করে
ছক্কা ও চারে ১৫ রান করেন গিল।
মাত্র দুই দিনেই তৃতীয় টেস্ট জিতে ৪ ম্যাচের সিরিজে ২-১
ব্যবধানে এগিয়ে গেছে ভারত।
উইকেটে কখনও বড় টার্ন পেলেন বোলাররা। কখন বল থামল, কখনও আবার স্কিড করল। বাড়তি বাউন্সও হলো দিন জুড়ে। সব সুবিধাই দুই দলের
স্পিনাররা কাজে লাগালেন দারুণভাবে। ১৭ উইকেট পতনের দিনে আরেকটি ব্যাটিং ব্যর্থতায়
সিরিজে পিছিয়ে গেছে ইংল্যান্ড।
৩ উইকেটে ৯৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা ভারতের প্রথম ইনিংস
গুটিয়ে যায় কেবল ১৪৫ রানে। রুটের অফ স্পিন ও জ্যাক লিচের বাঁহাতি স্পিনের জবাবই
খুঁজে পায়নি স্বাগতিকরা।
অজিঙ্কা রাহানেকে এলবিডব্লিউ করে প্রথম আঘাত হানেন লিচ।
এরপর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি ভারত। স্বাগতিকরা শেষ ৭ উইকেট হারায় কেবল ৩১
রানে।
আগের দিন ফিফটি তুলে নেওয়া রোহিত শর্মাকেও থামান লিচ।
ভারতীয় ওপেনার ১১ চারে ৯৬ বলে করেন ৬৬ রান।
টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার পাঁচ উইকেট পেয়েছেন জো রুট। ছবি: বিসিসিআই
রিশাভ পান্তকে কট বিহাইন্ড করে শিকার ধরেন রুট। পরে আরও
চার উইকেট নিয়ে দেড়শর আগেই স্বাগতিকদের গুটিয়ে দেন ইংলিশ অধিনায়ক।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৬ ওভার ২ বলে ৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট
নেন রুট। টেস্ট ইতিহাসে স্পিনার হিসেবে সবচেয়ে কম রান দিয়ে ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার
রেকর্ড এটি। তার আগের সেরা ছিল ৪/৮৭।
লিচ ৪ উইকেট নেন ৫৪ রানে।
৩৩ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা ইংল্যান্ড
আকসার ও অশ্বিনের স্পিনে গুটিয়ে যায় কেবল ৮১ রানে। ভারতের বিপক্ষে দেশটি এই প্রথম
টেস্টে একশ রানের নিচে গুটিয়ে গেল।
প্রথম তিন বলে জ্যাক ক্রলি ও জনি বেয়ারস্টোকে বোল্ড করে
দেন আকসার। দুই জনই খেলেন ভুল লাইনে। প্রথম বলে সুইপ করার চেষ্টায় এলবিডব্লিউ হলে
রিভিউ নিয়ে বাঁচেন বেয়ারস্টো। পরের বলেই ফিরেন বোল্ড হয়ে। এলবিডব্লিউ করে ওপেনার
ডম সিবলিকে থামান আকসার।
চতুর্থ উইকেটে রুট ও বেন স্টোকসের ব্যাটে কিছুটা প্রতিরোধ
গড়ে ইংল্যান্ড। তিন চারে ২৫ রান করা স্টোকসকে এলবিডব্লিউ করে ৩১ রানের জুটি ভাঙেন
অশ্বিন।
ইংল্যান্ড শেষ ৭ উইকেট হারায় কেবল ৩১ রানে। রুটকে ফিরিয়ে
ম্যাচে নিজের দশম উইকেট নেন আকসার। বেন ফকসকে এলবিডব্লিউ করে ম্যাচে দ্বিতীয়বারের
মতো বাঁহাতি এই স্পিনার নেন পাঁচ উইকেট।
এর আগেই জফ্রা আর্চারকে এলবিডব্লিউ করে চারশ উইকেটের
মাইলফলক স্পর্শ করেন অশ্বিন (৭৭)। টেস্টে তার চেয়ে কম ম্যাচে এই মাইলফলক
ছুঁয়েছিলেন কেবল মুত্তিয়া মুরালিধরন (৭২)।
জেমস অ্যান্ডারসনকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে ৮১ রানে গুটিয়ে
দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস টেকে কেবল ৩০.৪ ওভার।
ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টেই ম্যাচে ১০ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন আকসার প্যাটেল। ছবি: বিসিসিআই
ছোট লক্ষ্য অনায়াসে ছুঁয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল
খেলার সম্ভাবনা জোরালো করল ভারত। আর শিরোপা লড়াই থেকে ছিটকে গেল ইংল্যান্ড।
সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্টে ভারত অন্তত ড্র করলেই
ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে কোহলিরা। আর ইংল্যান্ড জিতলে ফাইনাল হবে
অস্ট্রেলিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের মধ্যে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১১২
ভারত ১ম ইনিংস: ৫৩.২ ওভারে
১৪৫ (আগের দিন ৯৯/৩) (রোহিত ৬৬, রাহানে ৭, পান্ত
১, অশ্বিন ১৭, সুন্দর ০, আকসার ০, ইশান্ত ১০*, বুমরাহ ১;
অ্যান্ডারসন ১৩-৮-২০-০, ব্রড ৬-১-১৬-০,
আর্চার ৫-২-২৪-১, লিচ ২০-১-৫৪-৪, স্টোকস ৩-০-১৯-০, রুট ৬.২-৩-৮-৫)।
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৩০.৪ ওভারে ৮১
(ক্রলি ০,
সিবলি ৭, বেয়ারস্টো ০, রুট
১৯, স্টোকস ২৫, পোপ ১২, ফোকস ৮, আর্চার ০, লিচ ৯,
ব্রড ১*, অ্যান্ডারসন ০; আকসার ১৫-০-৩২-৫, অশ্বিন ১৫-৩-৪৮-৪, সুন্দর ০.৪-০-১-১)।
ভারত ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৯)
৭.৪ ওভারে ৪৯/০ (রোহিত ২৫*, গিল ১৫*; লিচ
৪-১-১৫-০, রুট ৩.৪-০-২৫-০)।
ফল: ভারত ১০ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৪ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে
ভারত
ম্যান অব দা ম্যাচ: আকসার প্যাটেল।