শুক্রবারের এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ৫৭ জন সদস্য রয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শনিবার জানিয়েছে।
হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিহতদের অধিকাংশই গুলিতে জখম হয়ে মারা গেছেন। আহত প্রায় ১২০ জন প্রতিবাদকারীকে তাদের এখানে ভর্তি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
গত রোববার একদল বিক্ষোভকারী পাথর ও ককটেল নিয়ে প্রাদেশিক সরকারের দাপ্তারিক ভবনে চড়াও হলে নিরাপত্তা বাহিনী গুলিবর্ষণ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। তারপর থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে শহরটিতে সহিংসতা চলছে।
২০১৯ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত নিহত প্রতিবাদকারীদের সবার হত্যার বিচার ও প্রাদেশিক গভর্নরের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ থেকে সহিংসতার শুরু।
শুক্রবার রাতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, “নাসিরিয়া থেকে আসা ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে, তাতে পরিষ্কার গুলির শব্দ শোনা গেছে আর পুলিশকে গুলি করতে দেখা গেছে, এর পাশাপাশি মৃত প্রতিবাদকারীদের লাশও রাস্তায় পড়ে ছিল।”
ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত হাই কমিশন ফর হিউম্যান রাইটসের সদস্য আলী বায়াতি টুইটারে জানিয়েছেন, গত পাঁচ দিনে পাঁচ জন নিহত ও ২৭১ জন আহত হয়েছেন যাদের মধ্যে ১৪৭ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
“নাসিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে, রক্তপাত হচ্ছে আর সরকার তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে,” টুইটারে বলেছেন তিনি।
২০১৯ সালে কয়েক দশকের মধ্যে ইরাকের সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী প্রতিবাদ শুরু হয়, যা কয়েক মাস ধরে একটানা চলে। হাজার হাজার ইরাকি রাস্তায় নেমে চাকরি, বিভিন্ন সরকারি সেবার ব্যবস্থা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ক্ষমতাসীন অভিজাতদের পদত্যাগ দাবি করতে থাকে।
ওই সময় প্রায় ৫০০ লোক নিহত হয়। ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
এরপর মে, ২০২০ এ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুস্তফা আল খাদিমি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে নিহত ও নির্যাতনের শিকার আন্দোলনকারীদের জন্য সুবিচারের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন, কিন্তু তারপর থেকে এ পর্যন্ত কোনো বিচার শুরু হয়নি।
আগামী ৫ থেকে ৮ মার্চ পোপ ফ্রান্সিস ইরাক সফর করবেন। সফরে পোপের প্রাচীন মেসোপোটেমিয়ার উর শহরের পুরাকীর্তি দেখতে যাওয়ার কথা আছে। এই স্থানটির অবস্থান নাসিরিয়ার কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই।