শনিবার রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব
ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পাঠানো এক সংবাদ
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় দোষ স্বীকার করে আগের দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক
জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতের বাবা নুর মোহাম্মদ।
নিহত নুপুর (৮) নীলফামারীর
সৈয়দপুরের রসুলপুর রেল কোয়ার্টারের বসবাসকারী নুর মোহাম্মদের মেয়ে। ২০২০ সালের ৩
এপ্রিল নুপুর মারা গেলে আত্মহত্যা বলে প্রথমে দাবি করেছিল তার পরিবার।
রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, ঘটনার
দশ মাস পর মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
“তদন্তের মাত্র ১১ দিনের মাথায়
আমরা মূল রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হই। ঘাতক বাবার আদালতে স্বীকারোক্তির পর তাকে কারাগারে
পাঠানো হয়েছে।”
পিবিআইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো
হয়েছে, ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে স্ত্রী এবং দুই সন্তান
নুপুর (৮) ও আবু সোহান (৭) সহ বাড়িতে টিভি দেখছিলেন নুর মোহাম্মদ।
এক পর্যায়ে নুপুর কার্টুন
দেখার জন্য নুপুর বারবার বাবার কাছে স্মার্ট মোবাইল ফোনটি চাইতে থাকে। সেটি তাকে না
দেওয়ায় ‘বাবাকে গালি দেয়।’ এতে খেপে গিয়ে মেয়ের গলা চেপে ধরে নুর মোহাম্মদ। এক
পর্যায়ে নুপুর নিস্তেজ হয়ে মারা যায়।
পরে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে
চালানোর চেষ্টায় নুপুরের লেহেঙ্গার ওড়না দিয়ে কাপড় শুকানোর দড়িতে ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে
রাখা হয়।
এ ঘটনায় ওইদিন সৈয়দপুর থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলা
করে।
তবে প্রায় দশ মাসেও তদন্ত করেও
মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটন করতে না পারায় তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত
রংপুর পিবিআইকে মামলার তদন্ত ভার হস্তান্তর করে।
পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির
হোসেনের নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা নুরে আলম সিদ্দিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত
সংগ্রহ করেন।
আট বছরের শিশুর লেহেঙ্গার ওড়না
দিয়ে কাপড় শুকানোর হালকা দড়িতে আত্মহত্যার বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় নুর মোহাম্মদকে
আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এক পর্যায়ে নুর মোহাম্মদ নুপুর
মোবাইল ফোন চেয়ে বারবার বিরক্ত করায় এবং গালি দেওয়ায় হত্যা করে আত্মহত্যা বলে
প্রচারের কথা স্বীকার করেন।
পরে সৈয়দপুর আমলী আদালত-২
আদালতে সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদি হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক
জবানবন্দি দেন। বিচারক শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।