লালদিয়ার চরে উচ্ছেদ চালানে নৌ প্রতিমন্ত্রী অনড় মনোভাবের কথা জানানোর
দুদিন পর শনিবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজন এ আহ্বান
জানান।
চট্টগ্রাম বন্দর ‘লোভি বণিক সিন্ডিকেটের কবলে’ পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন বন্দরকেন্দ্রিক
রাজনীতিতে দীর্ঘদিন প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী সুজন।
তিনি বলেন, ওই ‘সিন্ডিকেট’ কর্ণফুলী নদীকে ঘিরে যে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সৃষ্টি
হচ্ছে সেটাকে গ্রাস করে কর্ণফুলীর আশেপাশের জীবনধারাকে ধ্বংস করতে চায়।
বন্দর কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ
সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।
উচ্ছেদ করতে গিয়ে যদি কোন রক্তক্ষয় কিংবা কোনো মানুষের জীবনহানি হয়, তার পরিপূর্ণ
দায়দায়িত্ব চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলেও সুজন হুঁশিয়ার করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় ২৮ ফেব্রুয়ারি বা ১ মার্চ উচ্ছেদের উদ্যোগ
নিয়েছে।
শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন ও সমাবেশ করে পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চর ছাড়বেন না
বলে জানিয়ে দিয়েছেন চরের বাসিন্দারা।
বিবৃতিতে সুজন বলেন, “লালদিয়ার চর এলাকার বিশাল জায়গা উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছে
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদের পূর্বে তাদের গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং পানির লাইনও বিচ্ছিন্ন
করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এক নিদারুণ যন্ত্রণার মরুভূমিতে বসবাস করছে ওই এলাকার
হাজার হাজার অধিবাসী। যা পাক হানাদার বাহিনীর নির্মমতাকেও হার মানিয়েছে।”
সুজন বলেন, “ইতিপূর্বে লালদিয়া চরের একাংশকে উচ্ছেদ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের
নিকট লিজ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানেও সে রকম কিছু করার পাঁয়তারা করছে চট্টগ্রাম বন্দর
কর্তৃপক্ষ, যা চট্টগ্রামবাসীর মুখে মুখে। ইতোমধ্যে তাদের মুখোশ চট্টগ্রামবাসীর নিকট
উন্মোচিত হয়েছে।”
১৯৭২ সালে বিমান ঘাঁটি সম্প্রসারণের সময় স্থায়ী বন্দোবস্তি পাওয়ার আশ্বাসের
ভিত্তিতে নিজেদের ভিটামাটি ছেড়ে লালদিয়ার চরে বসতি শুরু করে স্থানীয় কয়েকশ পরিবার।
এখন ওই এলাকায় ২৩০০ পরিবারের ১৪ হাজার মানুষের বসবাস।
২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে এসে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী লালদিয়ার
চরে উচ্ছেদে অনড় অবস্থানের কথা জানান। পাশাপাশি বলেন, সেখানে পুনর্বাসনের মতোও কেউ
নেই।
লালদিয়ার চরে জমি ‘দখলে রেখে’ যারা আর্থিক ‘ফায়দা লুটেছে’ তাদের তালিকা করা
হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
ইতোমধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগ চরবাসীর পক্ষে তাদের
অবস্থান জানিয়েছেন।
সবশেষ মানবিক দিক বিবেচনায় এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে
‘বিকল্প প্রস্তাব’ দিয়েছে জেলা প্রশাসক।